দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদ গত ২৫ জুলাই সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। এদিন বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টা ৫০ মিনিটে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে আমেরিকার ভার্জিনিয়ার একটি হাসপাতালে মারা যান তিনি।
গত ২৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার একটি স্থানীয় মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় শাফিন আহমেদের। আজ (২৯ জুলাই) বিকেলে গায়কের মরদেহ ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, আগামী ৩০ জুলাই মঙ্গলবার বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে হবে শাফিন আহমেদের দ্বিতীয় জানাজা। এরপর বনানী কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে তাকে দাফন করা হবে। পাশাপাশি এদিন জুমার নামাজের পর গুলশান কমিউনিটি মসজিদে গায়কের কুলখানিও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান শিল্পীর পরিবার।
গত ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় একটি কনসার্টে অংশ নেওয়ার কথা ছিল শাফিন আহমেদের। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে শো বাতিল করা হয়। দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বাঁচানো যায়নি তাকে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এই গায়ককে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার।
বাংলাদেশের সংগীত অঙ্গনের দুই মহারথী সংগীতশিল্পী ফিরোজা বেগম এবং সুরকার কমল দাশগুপ্তের ছেলে শাফিন আহমেদ। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণে ছোটবেলা থেকেই গানের আবহে বেড়ে ওঠেন তিনি। বাবার কাছে উচ্চাঙ্গ সংগীত আর মায়ের কাছে নজরুলগীতি শিখেছেন।
বড় ভাই হামিন আহমেদের সঙ্গে ইংল্যান্ডে পড়তে গিয়ে পশ্চিমা সংগীতের সঙ্গে সখ্যতা হয় শাফিন আহমেদের। শুরু হয় এই গায়কের ব্যান্ড সংগীতের যাত্রা। ১৯৭৯ সালে একরকম শখের বশেই গড়ে তোলেন ব্যান্ড দল ‘মাইলস’। প্রথম কয়েক বছর বিভিন্ন পাঁচতারা হোটেলে ইংরেজি গান গাইতেন তারা। পরে মাইলসের বাংলা গানের প্রথম অ্যালবাম বের হয় ১৯৯১ সালে।
মাইলসের সঙ্গে তিন দশকের পথচলার সমাপ্তি টেনে ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বেরিয়ে আসেন শাফিন আহমেদ। তবে তার সংগীত যাত্রা চলতে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সলো অ্যালবামও জনপ্রিয় হয়।
পরে নিজের ব্যান্ড দল ‘ভয়েস অব মাইলস’ গড়ে তোলেন তিনি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই দলকেই এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছিলেন শাফিন। তবে খুব বেশি দূর যাওয়ার আগেই সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।