দক্ষিণ চীনের একটি সামরিক বন্দরে যৌথ নৌ মহড়া শুরু করেছে চীন ও রাশিয়া। চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা সিনহুয়া নিউজের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ সমর্থনে চীন তাদের নীতি পরিবর্তন না করলে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর কঠোর পরিণতির হুমকির কয়েকদিনের মধ্যেই চীন ও রাশিয়া যৌথ সামরিক মহড়া শুরু করলো।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে জানিয়েছে, রোববার (১৪ জুলাই) থেকে ‘যৌথ সমুদ্র মহড়া ২০২৪’ নামের এই মহড়া গুয়াংডং প্রদেশের ঝাংজিয়াং শহরের কাছে শুরু হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, চীন ও রাশিয়ার সেনারা সম্প্রতি পশ্চিম ও উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরে টহল দিয়েছে এবং আন্তর্জাতিক এই মহড়ার সঙ্গে আঞ্চলিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই। কোনো তৃতীয় পক্ষকে লক্ষ্য করা হয়নি।
চীনা রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভি জানিয়েছে, রোববার গুয়াংডং প্রদেশে শুরু হওয়া এই মহড়াটি জুলাইয়ের মাঝামাঝি পর্যন্ত চলতে পারে। এই মহড়ার লক্ষ্য নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলা এবং বিশ্বব্যাপী ও আঞ্চলিকভাবে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় নৌবাহিনীর সক্ষমতা প্রদর্শন করা। যৌথ এই মহড়ায় ক্ষেপণাস্ত্র-বিরোধী মহড়া, সমুদ্র হামলা এবং বিমান প্রতিরক্ষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
গত সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ন্যাটো জোটের শীর্ষ সম্মেলনে ৩২ সদস্য অনুমোদিত একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে বেইজিংকে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধেরে জন্য রাশিয়ার চরম সাহায্যকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
ন্যাটোর বিবৃতি বলা হয়, ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থনের ব্যাপারে বেইজিং যদি তাদের নীতির পরিবর্তন না করে, তবে চীনকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে। ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধকে সমর্থন করার পাশাপাশি ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করায় বেইজিং উভয় পক্ষকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে বলেও মন্তব্য করেন ন্যাটো প্রধান জেনস স্টলটেনবার্গ।
ন্যাটো বলেছে, চীন রাশিয়াকে অনেক প্রযুক্তি সরবরাহ করছে যেমন- মাইক্রো ইলেকট্রনিকস, যা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির জন্য চাবিকাঠি। চীনা এই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরিকৃত অস্ত্র ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে রাশিয়া।
তবে বেইজিং ন্যাটোর এই অভিযোগকে ‘এশিয়া অঞ্চলে উত্তেজনা বৃদ্ধির চেষ্টা’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, বেইজিং রাশিয়ার কাছে প্রাণঘাতী অস্ত্র বিক্রি করছে না। ইউক্রেনের যুদ্ধে চীনের ন্যায্য ও উদ্দেশ্যমূলক অবস্থান রয়েছে।