গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির লক্ষ্যে কাতারের রাজধানী দোহায় আলোচনার সময় ইসরাইল যে ‘নতুন শর্ত’ দিয়েছে, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা ইসরাইলের নতুন শর্তগুলো মানবেন না।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইসরাইলের নতুন শর্তের মধ্যে রয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময়ে মিশর সীমান্তে গাজার অভ্যন্তরে সেনা রাখা। কিন্তু হামাসের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের এ শর্ত মানবে না। তারা গাজায় সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি চায়।
হামাসের কর্মকর্তারা বলেছেন, গাজা থেকে ইসরাইলি সেনাদের সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে হবে। মিশর সীমান্তে বা অন্য কোনো সীমান্তেও ইসরাইলি সেনা রাখা যাবে না। এ ছাড়া যারা বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তাদেরও স্বাভাবিকভাবে গাজায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করতে হবে।
শুক্রবার গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে কাতারের দোহায় চলা বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছে। মধ্যস্থতাকারীরা আবারও আগামী সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসবেন।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের নতুন প্রস্তাব নিয়ে কাজ করবে।
এদিকে মধ্যস্থতাকারীদের বরাত দিয়ে হামাসের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইজ্জাত আল-রিশক বলেছেন, ইসরাইল আগের আলোচনায় ‘যাতে সম্মত হয়েছিল তা মেনে চলেনি’।
প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সর্বশেষ আলোচনা কয়েক মাসের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা। পরের সপ্তাহে কায়রোতে আবারও মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনায় বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে দোহায় আলোচনায় বসেন মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর নেতারা। তবে তার আগমুহূর্তে এক হামাস নেতা জানান, চুক্তিটি বাস্তবায়নের জন্য একটি রোডম্যাপ চেয়েছিল হামাস। ইসরাইলকে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে দেওয়ার জন্য যে আলোচনা, তাতে তারা অংশ নেবেন না।
গত মে মাসের শেষ দিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে প্রস্তাব দিয়েছিলেন তার ওপর ভিত্তি করেই যুদ্ধবিরতির রোডম্যাপটি হওয়া উচিত এবং ইসরাইলকে নতুন শর্ত যোগ করার জন্য অভিযুক্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হামাসই শর্ত পরিবর্তনের দাবি করেছে। এ অবস্থাতে দোহায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাসকে ছাড়াই দ্বিতীয় দিনের বৈঠক হয় শুক্রবার।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা চালায় হামাস। এর পর ইসরাইলি সামরিক বাহিনী গাজায় হামাসকে ধ্বংস করার জন্য অভিযান শুরু করে। ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা ১২০০– এর মতো। ওই সময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে হামাস। আর গাজায় নিহতের সংখ্যা ৪০ হাজারেরও বেশি। যুদ্ধ শুরুর পর এখন পর্যন্ত বেশ কয়েক বার চেষ্টা হয়েছে যুদ্ধবিরতি নিয়ে স্থায়ী চুক্তির। মাঝে সাময়িক যুদ্ধবিরতি থাকলেও শেষ পর্যন্ত এ নিয়ে কার্যত কোনো সমাধান আসেনি।