ঢাকা
৬ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৪:৩২
logo
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ৯, ২০২৪

আর বিদেশে শিশু দত্তক দেবে না চীন, উদ্বিগ্ন আমেরিকা!

নিজ দেশের শিশুদের বিদেশে দত্তক দেওয়ার কর্মসূচি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে চীন।

বৃহস্পতিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান।

তিনি বলেন, চীন এখন থেকে আন্তর্জাতিকভাবে শিশুদের দত্তক দেওয়ার অনুমতি দেবে না। তবে রক্তের সম্পর্কিত আত্মীয় বা সৎ সন্তানকে দত্তক নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম প্রযোজ্য হবে।
মাও এই সিদ্ধান্তের কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তিনি বলেছেন, এটি প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, “যেসব বিদেশি সরকার ও পরিবার চীনা শিশুদের দত্তক নিতে চেয়েছেন, তাদের শুভ ইচ্ছা, ভালোবাসা ও সহানুভূতির প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।”

চীনের এমন সিদ্ধান্তে উদ্বিগ্ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। চীনের কাছে তারা স্পষ্টভাবে জানতে চেয়েছে, এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দত্তক নিতে আগ্রহী এবং ইতোমধ্যেই আবেদনকারী শত শত মার্কিন পরিবারের ওপর এর প্রভাব কী হবে?

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে লিখিতভাবে এ ব্যাপারে স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর বলেছে, “আমাদের জানা মতে, শত শত পরিবার এখনও তাদের দত্তক নেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে এবং তারা বর্তমানে যে পরিস্থিতিতে আছে আমরা তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করছি।”

এদিকে, বুধবার কিছু দত্তক সংস্থাকে পাঠানো চিঠিতে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করা তথ্য থেকে জানা যায়, সমস্ত প্রক্রিয়াধীন দত্তক আবেদনগুলোর ভ্রমণের অনুমোদন ইতোমধ্যেই জারি করা হলেও সেগুলো ছাড়া অন্যান্য সব আবেদন বাতিল করা হয়েছে বলে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে জানিয়েছে চীনা কর্তৃপক্ষ।

চীনে মার্কিন কূটনীতিকদের সাথে এক ফোনালাপে বেইজিং জানিয়েছে, বিশেষ ধারার সাথে সম্পর্কিত আবেদন ছাড়া অন্য কোনও পর্যায়ের আবেদন তারা আর গ্রহণ করবে না।

বিগত কয়েক দশকে বহু মানুষ চীন থেকে শিশু দত্তক নিয়েছেন, যাদের অনেকেই চীনে গিয়ে এ শিশুদের দত্তক নিয়েছেন। তবে প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক দম্পতিকে অনুমোদন পাওয়ার পরেও বছরের পর বছর, কখনও কখনও প্রায় এক দশক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে তাদের শিশুকে পাওয়ার জন্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পরিবারগুলো চীন থেকে মোট ৮২ হাজার ৬৭৪ শিশু দত্তক নিয়েছে, যা যেকোনও বিদেশি দেশের মধ্যে সর্বাধিক।

কোভিড মহামারীর কারণে ২০২০ সাল থেকে আন্তঃদেশীয় দত্তক প্রক্রিয়া বেশিরভাগই স্থগিত ছিল। এছাড়াও, চীনের রাজনৈতিক, জনসংখ্যাগত এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবর্তনের কারণে অনেকেই দত্তক নীতি বাতিল হওয়ার বা কঠোর হওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের সর্বশেষ বার্ষিক দত্তক রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনা সরকার স্থগিতাদেশের আগে ভ্রমণের অনুমোদনপ্রাপ্ত শিশুদের দত্তক প্রক্রিয়া পুনরায় শুরু করেছিল, তবে সেই সংখ্যাটি খুবই কম ছিল।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের মধ্যে চীন থেকে ১৬টি দত্তক ভিসা ইস্যু করা হয়েছে, যা দুই বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো দত্তক প্রক্রিয়ার অনুমোদন। তবে এরপর আরও ভিসা ইস্যু হয়েছে কিনা, তা স্পষ্ট নয়।

২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারী এবং চীনের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে আন্তর্জাতিক দত্তক প্রক্রিয়া মূলত স্থগিত ছিল। ডেনমার্কের একমাত্র বিদেশি দত্তক সংস্থা বন্ধ হওয়ার পর এবং নরওয়ে দুই বছরের জন্য বিদেশি দত্তক স্থগিত করার সুপারিশ করার পর দত্তক প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।

চীন তার আন্তর্জাতিক দত্তক প্রোগ্রাম বন্ধ করার ঘোষণা দেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সম্ভাব্য এবং বর্তমান দত্তক পিতা-মাতা ও যারা অতীতে দত্তক হিসেবে বিভিন্ন বিদেশি পরিবারে বড় হয়েছেন তারা এ সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কারণ তাদের ধারণা, এতে দত্তক নেওয়া শিশুদের জন্য ভবিষ্যতে তাদের জন্ম নেওয়া পরিবার এবং পূর্ববর্তী এতিমখানার সঙ্গে পুনরায় সংযোগ স্থাপনের সুযোগ সীমিত হতে পারে।

অন্যদিকে, অনেকে এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী বলে মনে করেছেন এবং আশা করছেন, এখন শিশুদের নিজেদের দেশে আরও ভালোভাবে যত্ন নেওয়া হবে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থা নানচাং প্রজেক্ট, যারা দত্তক নেওয়া চীনা শিশুদের তাদের জীবিত পরিবারের সাথে পুনর্মিলিত হতে সাহায্য করে, এই ঘোষণাকে ‘একটি যুগের অবসান’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

সংস্থাটি চীনে থাকা অবশিষ্ট শিশুদের যথাযথ যত্ন এবং মনোযোগ পাওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছে। তারা আরও উল্লেখ করেছে, মহামারির আগে থেকেই দত্তকের সংখ্যা নাটকীয়ভাবে কমছিল, যা চীনের উন্নত অর্থনীতি, জন্মহার হ্রাস এবং পুত্রসন্তানের প্রতি সামাজিক পছন্দের অবসান ঘটার কারণে হয়েছে।

২০২৩ সালে চীনে নবজাতকের সংখ্যা ৯.০২ মিলিয়নে নেমে এসেছে এবং জনসংখ্যা পরপর দ্বিতীয় বছরের মতো হ্রাস পেয়েছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram