জার্মানির প্রধান বিরোধী শিবির সাধারণ নির্বাচনের এক বছর আগেই চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী হিসেবে ফ্রিডরিশ ম্যারৎস-কে তুলে ধরছে৷ রক্ষণশীল এই জোটের জনপ্রিয়তা সত্ত্বেও ম্যারৎস নিজে তেমন সমর্থন পাচ্ছে না৷
চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের নেতৃত্বে তিন দলের জোট সরকার প্রায় তিন বছর পূর্ণ করছে৷ ইউক্রেন যুদ্ধের মতো একাধিক চ্যালেঞ্জ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেই জোট৷ তার উপর বিভিন্ন ইস্যুতে শরিক দলগুলির মধ্যে কোন্দল বার বার প্রকাশ্যে চলে আসায় এই সরকারের উপর মানুষের আস্থ কমছে, যার প্রভাব একের পর এক নির্বাচনে দেখা যাচ্ছে৷ চ্যান্সেলর হিসেবে শলৎসের জনপ্রিয়তাও বড় ধাক্কা খাচ্ছে৷
এমন প্রেক্ষাপটে ২০২৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের প্রায় এক বছর আগে প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবির চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী স্থির করেছে৷ রক্ষণশীল সিডিইউ দলের প্রধান ফ্রিডরিশ ম্যারৎসই জার্মানির আগামী চ্যান্সেলর হতে চান৷ দলের অন্যান্য সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী এবং বাভেরিয়ার সিএসইউ দলের নেতা মার্কুস স্যোডার নিজেদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা সরিয়ে রেখে শিবিরের নেতা হিসেবে ম্যারৎস-এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন৷ ২০২১ সালের নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন শিবিরে চ্যান্সেলর পদপ্রার্থী নিয়ে রেষারেষি ও বিভ্রান্তি পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল বলে দুই দলের অনেকে মনে করেন৷ তাই এ যাত্রায় বিষয়টি যথেষ্ট আগে স্পষ্ট করে দিলো প্রধান বিরোধী শিবির৷
একাধিক জনমত সমীক্ষায় জার্মানির রক্ষণশীল শিবির শীর্ষ স্থানে রয়েছে৷ শলৎসের জোট সরকারের তিন শরিক দলের প্রতি সম্মিলিত সমর্থনের তুলনায় সিডিইউ ও সিএসইউ দল বেশি মানুষের সমর্থন পাচ্ছেন৷ অর্থাৎ এখনই নির্বাচন হলে সবচেয়ে শক্তিশালী দল হিসেবে সরকারের নেতৃত্ব দিতে পারে ইউনিয়ন শিবির৷ তবে নেতা হিসেবে ফ্রিডরিশ ম্যারৎস সেই জনপ্রিয়তার ফায়দা তুলতে পারছেন না৷ একটি সমীক্ষা অনুযায়ী মাত্র ২৫ শতাংশ ভোটার তাঁকে দেশের আগামী চ্যান্সেলর হিসেবে দেখতে চান৷ অন্যদিকে শলৎস ২১ শতাংশ সমর্থন পেয়ে তাঁর তুলনায় সামান্য পিছিয়ে আছেন৷ অর্থাৎ প্রায় ৪৮ শতাংশ মানুষ দুজনের মধ্যে কাউকেই চান না৷
মানুষের মন জয় করতে ম্যারৎস নিজে অভিবাসন ও অর্থনৈতিক নীতিকে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন৷ বিশেষ করে একাধিক আঞ্চলিক নির্বাচনে উগ্র দক্ষিণপন্থি এএফডি দলের বিপুল সাফল্যের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি জনগণের অসন্তোষের ফায়দা তুলতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন বলে সমালোচকরা মনে করছেন৷ সম্প্রতি তিনি দেশের বৃহত্তর স্বার্থে শলৎসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছিলেন৷ তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, তাঁর কিছু দাবি জার্মানি তথা ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়৷ ফলে নেতা হিসেবে তাঁর দায়িত্বজ্ঞান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে৷ তাঁর অনেক বেফাঁস মন্তব্য নিয়েও দলকে বার বার অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে৷