ভারতীয় সামরিক বাহিনী যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন এমকিউ নাইনবি প্রিডেটর বা শিকারি ড্রোন কিনছে। ড্রোন কেনার জন্য ৩২ হাজার কোটি রূপির চুক্তি চূড়ান্ত করেছে ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত মঙ্গলবার ৩১টি সশস্ত্র এমকিউ-নাইন বি স্কাইগার্ডিয়ান, সিগার্ডিয়ান এবং সিগার্ডিয়ার হাই অ্যালটিটিউড লং এনডিউরেন্স (হেইল) ড্রোন কেনার জন্য মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।
চুক্তিটির আলোচনা ২০১৮ সালে শুরু হয়েছিল।
এই চুক্তি ভারতের নজরদারি এবং গোয়েন্দা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কেনা থেকেও ভারতকে বিরত রাখবে এবং চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্য মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
ভারতের সর্বোচ্চ প্রতিরক্ষা সংস্থা গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ওয়াশিংটনে রাষ্ট্রীয় সফরের ঠিক আগে এই চুক্তির অনুমোদন করেছিল এবং পেন্টাগন গত ফেব্রুয়ারিতে ড্রোন কেনার চুক্তিটি অনুমোদন করেছিল। রয়টার্স গত বছর প্রতিবেদনে বলেছিল, ড্রোনগুলো প্রধানত ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নৌবাহিনী ব্যবহার করবে।
এনডিটিভি ওয়ার্ল্ড এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী ‘সিগার্ডিয়ান’ ধরনের ১৫ টি শিকারি ড্রোন পাবে। বিমান বাহিনী এবং স্থলবাহিনী ‘স্কাইগার্ডিয়ান’ ধরনের ৮ টি করে শিকারি ড্রোন পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের এমকিউ- নাইন বি শিকারি ড্রোন ‘এমকিউ-নাইন রিপার’ নামে পরিচিত। ড্রোনটি ৪০ হাজার ফুটের বেশি উচ্চতায় একবারে ৪০ ঘন্টা উড়তে পারে।
নিজের ওজনের বাইরে ড্রোনটি দুই হাজার ১৫৫ কেজি বহন করতে সক্ষম। এর সর্বোচ্চ গতি ঘন্টাপ্রতি ৪৪২ কিলোমিটার।
নজরদারি ক্ষমতা ছাড়াও এমকিউ-নাইন বি মিসাইল দিয়ে সজ্জিত। এটি নির্ভুলতার সঙ্গে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। এ ছাড়া স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেক-অফ এবং অবতরণ করতে সক্ষম ও নিরাপদে বেসামরিক আকাশসীমায় একীভূত হতে পারে।
এই ক্ষমতাগুলোর কারণে ড্রোনটিকে স্থল ও সামুদ্রিক নজরদারি, সাবমেরিন-বিরোধী এবং ভূখন্ডে যুদ্ধ, ইলেকট্রনিক যুদ্ধ এবং বিভিন্ন মিশনের জন্য আদর্শ মানা হয়।
একটি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে তার কাজ সহজেই সম্পাদন করতে পারে। এই ড্রোন ব্যবহার করে ভারত ৭,৫০০ কিলোমিটার উপকূল রেখা বরাবর নজরদারি চালাতে পারবে। আবহাওয়া যেমনই হোক, নিঃশব্দে শত্রু শিবিরে হানা দিতে পারে শিকারি ড্রোন। তালেবান নেতা মোল্লা ওমর, সিরিয়া আল কায়েদা প্রধান সেলিম আবু আহমদ এবং আল কায়েদা নেতা আয়মান আল জাওয়াহিরি এমনকী ইরানের জেনারেল কাসেম সোলেমানিকেও এই শিকারি ড্রোন দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল বলে শোনা যায়।
তবে ভারতের দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী চীন ও পাকিস্তানের অত্যাধুনিক বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, যা ভারতের স্থল সীমান্তে ড্রোনের ব্যবহার সীমিত করতে পারে।
সূত্র : রয়টার্স, এনডিটিভি