ঢাকা
৪ঠা নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:৩৪
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ২১, ২০২৪

টিকটক তারকা থেকে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট সুবিয়ান্তো

ইন্দোনেশিয়ার সাবেক জেনারেল প্রাবোও সুবিয়ান্তো দেশটির অষ্টম প্রেসিডেন্ট হিসেবে পার্লামেন্টে শপথ নিয়েছেন। রোববার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দেশ শাসনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন ৭৩ বছর বয়সী প্রাবোও। তিনি ইন্দোনেশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচার সুহার্তোর জামাতা।

কে এই প্রবোও সুবিয়ান্তো:

একটা সময় ছিলো যখন প্রবোও সুবিয়ান্তোর নাম বেশির ভাগ ইন্দোনেশিয়ানকে ভয় ধরিয়ে দিতো। হবেই না কেন? ধনী রাজনৈতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ তার। একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ যিনি ইন্দোনেশিয়ার মন্ত্রিসভায় দায়িত্ব পালন করেছিলেন তার পুত্র সুবিয়ান্তো। তবে, ১৯৫৭ সালে বিতর্কের মধ্যে দেশ ছেড়েছিলেন তার বাবা। বাবাকে অনুসরণ করে শৈশবের এক দশক ইউরোপে নির্বাসনে কাটিয়েছিলেন।

এরপর ফিরে আসেন নিজ দেশে। যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। দ্রুত পদে উন্নীত হয়ে ইন্দোনেশিয়ার অভিজাত বিশেষ বাহিনী কোপাসাসের অধিনায়ক হন। পদোন্নতির সাথে সুবিয়ান্তোর জীবনে আসে এক কালো অধ্যায়। তৎকালীন অশান্ত পূর্ব তিমুরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত হন এই প্রাক্তন বিশেষ বাহিনীর কমান্ডার, যেখানে তিনি ইউনিটের সদস্য হিসাবে কাজ করেছিলেন।

তিমুরে সামরিক অভিযানে তার সঠিক ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শত শত মানুষকে হত্যার জন্য অভিযুক্ত হন তিনি। যদিও হত্যাকাণ্ড কখনও প্রমাণিত হয়নি এবং তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেই এসেছেন। তবে, ২০১৪ সালে আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অপহরণের নির্দেশ দেয়া তিনি স্বীকার করেন। তবে শুধুমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশেই তা করেছিলেন তিনি।

ঐই ঘটনার পর প্রবোওকে সামরিক বাহিনী থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছিল। এরপর তিনি জর্ডানে স্ব-আরোপিত নির্বাসনে চলে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ব্ল্যাক লিস্টেড ছিলেন তিনি।

এরপর ২০১৪ ও ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। যদিও তিনি হেরে যান। কিন্তু তার আসল প্রত্যাবর্তন ধরা যায় ২০১৯ সালে। সেই বছর, উইডোডো নির্বাচনে বিজয়ী হবার পর, সুবিয়ান্তোকে তার প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত করেন। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, উইডোডো; তার চির প্রতিদ্বন্দ্বীকে মিত্রে পরিণত করেছেন।

যদিও প্রবোও তার পরাজয়ের পেছনে ক্ষমতাসীনদের প্রতারণা রয়েছে বলে দায়ী করেছিলেন। সেই সময়ে সহিংস বিক্ষোভে আটজন নিহত হয়।

শপথ গ্রহণ:

শপথ অনুষ্ঠানে সুবিয়ান্তো ইন্দোনেশিয়ার নিরপেক্ষ বৈদেশিক নীতি বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। এদিন ঐতিহ্যবাহী পোশাকে শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন তিনি।

উপস্থিত আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ইন্দোনেশিয়ার সব নাগরিকের, এমনকি যারা আমাদের ভোট দেননি, তাদের স্বার্থকেও অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা ইন্দোনেশিয়া সরকারকে নেতৃত্ব দেব। এ সময় আইনপ্রণেতারা তার নামে স্লোগান দেন এবং সাধুবাদ জানান।

এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরে রাজধানী জাকার্তায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় এক লাখ পুলিশ ও সেনাসদস্য। শপথ অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড লামি, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হান ঝেংসহ বেশ কিছু বিদেশি কূটনীতিক অংশ নেন।

নতুন ক্যাবিনেটে কতজন সদস্য রয়েছে?

১৯৯৬ সালের পর এই প্রথম বিশাল ১০৯ জন সদস্য নিয়ে মন্ত্রিসভায় শপথ নিলেন সুবিয়ান্তো। গত ফেব্রুয়ারিতে, ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হওয়ার পরপরই অনানুষ্ঠানিক ভোট গণনায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী সুবিয়ান্তো এবং তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জিবরান রাকাবুমিং রাকাকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০ মার্চ দেশটির নির্বাচন কমিশন তাদের বিজয়ী ঘোষণা করে। জিবরান রাকাবুমিং রাকা হলেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর বড় ছেলে।

ইন্দোনেশিয়ার নিয়ম অনুযায়ী, কোনো প্রার্থী যদি প্রথম দফায় ৫০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত না করতে পারেন, তবে নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়। তবে প্রাবোও প্রথম দফার ভোটাভুটিতেই প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য যথেষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিশ্চিত করেন।

নেচে কীভাবে জনপ্রিয় হলেন প্রাবোও সুবিয়ান্তো?

নির্বাচনী প্রচারণা ভিন্ন আঙ্গিকে করছেন তিনি। নির্বাচনী প্রচারণায়, তিনি নৃত্য পরিবেশন করেন। তার ডান্স স্টেপ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টিকটকে বেশ সাড়া ফেলেছে। ইন্দোনেশিয়ার শিশু থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সের মানুষ নাচেছেন সুবিয়ান্তো সেই ডান্স স্টেপে। সবার তাকে আদর করে নাম দিয়েছেন ‘কাডল ড্যাডি’।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram