উত্তর গাজার জাবালিয়ায় গত ৪৮ ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ জনেরও বেশি শিশু নিহত হয়েছে। এলাকাটিতে দুটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলা চালায় দখলদার বাহিনী, যেখানে শতাধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। শনিবার (২ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল (ইউনিসেফ)।
এছাড়া, জাবালিয়া-এলনাজলা অঞ্চলে পোলিও টিকাদান কর্মসূচিতে নিয়োজিত একজন ইউনিসেফ কর্মীর ব্যক্তিগত গাড়িতে কোয়াডকপ্টার থেকে গুলি চালানো হয়েছে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের সংস্থাটি। গাড়িটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ওই কর্মী প্রাণে রক্ষা পেয়েছেন। তবে এই ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভীষণভাবে বিচলিত হয়ে পড়েছেন।
একই সময় শেখ রাদওয়ান এলাকায় একটি টিকাদান ক্লিনিকের কাছেও হামলার খবর পাওয়া গেছে। সেখানে অন্তত তিনজন শিশু আহত হয়েছে।
ইউনিসেফ বলেছে, এসব হামলা সাধারণ মানুষের জীবনের জন্য চরম হুমকি হয়ে উঠছে এবং মানবিক সহায়তাকারী কর্মীদের জন্য একটি নতুন সংকট তৈরি করেছে।
ইউনিসেফ প্রধান বলেন, এই হামলাগুলো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে, যা সবসময় সাধারণ মানুষ ও বেসামরিক কাঠামো রক্ষার ওপর জোর দেয়। কোনো পক্ষই সাধারণ নাগরিক ও বেসামরিক অবকাঠামোকে সামরিক লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করতে পারে না।
ইউনিসেফ তাদের কর্মীর গাড়িতে হামলার ঘটনার তদন্ত করতে এবং দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা নিতে ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া, সংস্থাটি জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে, তারা যেন এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের জন্য প্রভাবশালী ভূমিকা পালন করে।
অব্যাহত বোমাবর্ষণ, খাদ্যাভাব ও স্বাস্থ্য সেবার অভাবে উত্তর গাজার শিশুরা চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এবং এই পরিস্থিতি অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৪৩ হাজার ৩১৪ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ। এক বছর ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে উপত্যকার বেশিরভাগ ঘরবাড়ি, বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ।
সূত্র: ইউনিসেফ, আল-জাজিরা