ঢাকা
১০ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৮:০১
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ৭, ২০২৪

যে কারণে কমলা হ্যারিসের শোচনীয় হার

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প আরও একবার মানুষের আস্থা জয় করে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। প্রয়োজনীয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোট ২৭০ পার করে জয়ী হয়েছেন তিনি। আর ট্রাম্পের প্রতিপক্ষ ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হ্যারিস মাত্র ২২৩ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিয়ে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয়েছেন।

ভোটের মাঠে এমন পরাজয়ে হতাশ ডেমোক্র্যাট শিবির। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কাঙ্ক্ষিত ফল ঘরে তুলতে না পারার কারণ কি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

আলোচনায় প্রথমেই যে বিষয় সামনে আসছে, তা হলো ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো আগে থেকেই নির্বাচনি প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পাননি কমলা হ্যারিস। কেননা এবার ডেমোক্রেটিক পার্টির পূর্বনির্ধারিত প্রার্থী ছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কিন্তু ভোটকে সামনে রেখে গত জুনে প্রথম টেলিভিশন বিতর্কে ট্রাম্পের কাছে চরমভাবে ধরাশায়ী হন বাইডেন। ট্রাম্পের চাতুর্যপূর্ণ কথার জবাব দিতে গিয়েই মাঝেমধ্যে হোঁচট খাচ্ছিলেন তিনি। ওই বিতর্কের পর বাইডেনের বয়স ও রাষ্ট্রের শীর্ষ পরিচালনায় তার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। এ নিয়ে বিতর্কের মুখে একপর্যায়ে কমলা হ্যারিসকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন বাইডেন। ফলে স্বল্প সময়ের নোটিশে দীর্ঘ প্রস্তুতি নেওয়া ট্রাম্পকে হারানোর লড়াইয়ে নামতে হয় কমলা হ্যারিসকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমলা হ্যারিসের একজন সহযোগী সংবাদমাধ্যম পলিটিকোকে বলেন, প্রথম দিকে দলের পক্ষ থেকে জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত করতে ব্যাপক প্রচার চালানো হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে প্রার্থিতা পরিবর্তন দলকে এমন বিপর্যয়কর ফলাফলের দিকে ঠেলে দিয়েছে।

ভোটের মাঠে নেমেই ব্যাপক প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়েন ডেমোক্রেটিক পার্টির নতুন প্রার্থী। বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনি সমাবেশ ও নারীদের জমায়েতের পাশাপাশি বিনোদনজগতের তারকাদেরও নিজের পক্ষে মাঠে হাজির করেছেন তিনি। ছুটে গেছেন দাতাদের কাছে। কিন্তু দৃশ্যত তার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মেয়াদে বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি, গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন, ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে মার্কিন ভোটারদের অস্বস্তি ছিল স্পষ্ট। বাইডেন প্রশাসনের অংশ হওয়ায় এসব ইস্যুতে সরকারের ব্যর্থতার দায় তার কাঁধেও বর্তায়। এ বিষয়গুলো থেকে নিজেকে সেভাবে আলাদা করতে পারেননি কমলা হ্যারিস। ফলে এসব ইস্যুতে যারা বাইডেনের নীতির বিরুদ্ধে ছিলেন, প্রত্যাশা অনুযায়ী তাদের কাছে টানতে ব্যর্থ হয়েছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী। দলের কিছু নেতা এরই মধ্যে পুরো ফলাফল নিয়ে ব্যাপক অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনার দাবি তুলেছেন।

পলিটিকোর প্রতিবেদনে বলা হয়, বাইডেন প্রশাসনের যেসব বিষয়ে ভোটারদের মধ্যে অস্বস্তি ছিল, সামগ্রিকভাবে সেগুলো কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে ভোটারদের আশ্বস্ত করতে পর্যাপ্ত সুযোগ পায়নি কমলা হ্যারিসের প্রচার শিবির। ট্রাম্প শিবির যেখানে বছরের পর বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে, ইলন মাস্কের মতো ধনকুবেরকে সঙ্গে নিয়ে ভোটের মাঠে প্রচার চালিয়েছে; সেখানে নির্বাচনি প্রচারে কমলা হ্যারিস সময় পেয়েছেন ১০০ দিনের চেয়ে কিছু বেশি। ফলে এত কম সময়ের মধ্যে নানা ইস্যুতে ভোটারদের উদ্বেগ দূর করা তার জন্য খুব সহজ ছিল না। আর এই সুযোগই কাজে লাগিয়েছেন ট্রাম্প। দফায় দফায় ডেমোক্র্যাট সরকারের আমলে দেশের অর্থনীতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সামনে তুলে ধরেছেন গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধের মতো ইস্যুগুলো। অবৈধ অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর হওয়ার বার্তা দিয়েছেন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নানা ইস্যুতে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।

নির্বাচনি প্রচারে বিশেষ করে দেশের অর্থনীতি, কর ও অভিবাসন ইস্যুগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছেন ট্রাম্প। ভোটারদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ভোটে জিতলে তিনি ‘মূল্যস্ফীতির অবসান ঘটিয়ে আমেরিকাকে আবার সাশ্রয়ী করে তুলবেন’।

এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি উৎপাদন আরও সম্প্রসারিত করবেন। একই সঙ্গে জ্বালানি খরচ যেন কম আসে, সে জন্য আর্কটিক মরুভূমির মতো এলাকাগুলোয় নতুন তেলকূপ খনন করার উদ্যোগ নেবেন। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নাগরিকদের জন্য কর কমানোর কথাও বলেছেন ট্রাম্প।

এ ছাড়া উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের পাশাপাশি আমদানি পণ্যের ওপর শুল্কহার বাড়ানোর অঙ্গীকার করেছেন তিনি। দৃশ্যত ট্রাম্পের এসব অঙ্গীকারের বিপরীতে ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন কমলা।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram