ঢাকা
১৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৫:৪৬
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১০, ২০২৪

আসাদের পতনে ‌বড় অবদান তুরস্কের

২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগে বিক্ষোভ শুরু হয়। গণতন্ত্রের জন্য রাস্তায় নামেন সিরিয়াবাসী। কিন্তু তখন থেকেই তাদের ওপর দমন-পীড়ন শুরু করে আসাদ বাহিনী। এক সময় বাশার সরকারের বিরোধীরা তার বিরুদ্ধে হাতে অস্ত্র তুলে নেয়। দেশজুড়ে বেশ কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে। বিদ্রোহীরা দখল করে নেয় সিরিয়ার বেশিরভাগ এলাকা। এরপর দেশটিতে শুরু হয় রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ, পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যুর পর অবশেষে পতন হয়েছে সিরিয়ার স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদের।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে আসাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে ইসলামপন্থি দল হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ও অন্যান্য সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাদের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা অল্প সময়ের মধ্যেই তাঁর গদি নড়িয়ে দিতে সক্ষম হয়। বলা হচ্ছে ইরান ও রাশিয়া দীর্ঘদিন ধরে আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে এলেও তুরস্ক বিদ্রোহীদের পক্ষে থেকে এই সরকার পতনে বড় অবদান রেখেছে দেশটি।

রয়টার্স সোমবার জানিয়েছে, আসাদ সরকারকে উৎখাতে বড় অবদান রেখেছে তুরস্ক। বেশ কিছু বিষয় পর্যবেক্ষণ শেষে ছয় মাস আগে বিদ্রোহীরা তুরস্ককে এ অভিযানের ব্যাপারে অবহিত করে। ওই সময় দেশটির কাছ থেকে মৌন সম্মতি পায় তারা।

তুরস্কের সম্মতি ছাড়াও আরও কিছু বিষয় আসাদের পতন ত্বরান্বিত করেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো সিরিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে মনোবলের ঘাটতি ছিল। এ ছাড়া সেনারা ক্লান্ত ছিল। ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করে অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছিল ইরান ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ; যারা সরাসরি আসাদকে সহায়তা করত। নিজেরা দুর্বল হওয়ায় আসাদ বিপদে পড়ার পর তারা আর এগিয়ে আসতে পারেনি। এ ছাড়া আরেক বড় মিত্র রাশিয়া আসাদের ওপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিল। সবকিছু মিলিয়ে বিদ্রোহীরা দেখে স্বৈরাচার আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার এটি মোক্ষম সুযোগ।

সিরিয়ার বিদ্রোহী দলের এক সদস্য ও এক কূটনীতিক বলেছেন, তুরস্ককে না জানিয়ে বিদ্রোহীদের এ অভিযান শুরুর কোনো সুযোগ ছিল না। কারণ গৃহযুদ্ধের শুরু থেকেই তাদের সহায়তা করছিল আঙ্কারা।

এ ছাড়া সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তুরস্কের সেনাদের উপস্থিতি আছে। এইচটিএসের সঙ্গে বিশাল এ অভিযানে যোগ দেওয়া আরেক বিদ্রোহী দল সিরিয়ান ন্যাশনাল আর্মিকে (এসএনএস) সহায়তা করে তুরস্ক। যদিও এইচটিএসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে বিবেচনা করে তারা। কিন্তু আসাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সময় তাদের তুরস্ক ঠিকই সহায়তা করেছে।

এক বছর আগেও তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ও তাঁর সরকার আসাদের বিরুদ্ধে এমন বড় অভিযানের বিরোধিতা করেছে। কারণ তাদের শঙ্কা ছিল এতে নতুন করে শরণার্থী সংকট দেখা দিতে পারে। আবার দলে দলে মানুষ তুরস্কে ঢুকতে পারেন। কিন্তু এ বছরের শুরুতে এরদোয়ান মত পরিবর্তন করেন, যখন একাধিক অনুরোধের পরও বাশার আল-আসাদ বিদ্রোহীদের সঙ্গে কোনো ধরনের আলোচনায় বসেননি। আসাদের এমন একগুয়েমির কারণে সিরিয়ায় বিভাজন আরও গাঢ় হয়।

বিদ্রোহীদের একটি সূত্র জানিয়েছে, আসাদকে আলোচনায় বসাতে এরদোয়ান ব্যর্থ হওয়ার পর তারা নিজেদের অভিযানের বিস্তারিত তুরস্ককে দেখিয়েছিল। তুরস্ককে বিদ্রোহীরা বার্তা দিয়েছিলেন, অন্য উপায় (আলোচনা) বছরের পর বছর কাজে দেয়নি। তাহলে আমরা আমাদের উপায়ে চেষ্টা করে দেখি। আপনাদের কিছু করতে হবে না। শুধু হস্তক্ষেপ না করলেই হবে।

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সিরিয়ার বিরোধী দলের প্রধান হাদি আল-বাহরা গত সপ্তাহে বলেন, এইচটিএস এবং তুরস্কের সমর্থিত বিদ্রোহীরা নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে তারা কোনো সংঘর্ষে জড়াবে না এবং একে অন্যকে সহায়তা করবে। তুরস্কের সেনাবাহিনী এ চুক্তির বিষয়টি নিজেদের পর্যবেক্ষণে রেখেছিল।

তুরস্কভিত্তিক রাজনীতি বিজ্ঞানী ও মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের সাবেক স্কলার বিরল বাসকান বলেছেন, বাইরের শক্তি হিসেবে তুরস্ক এখানে সবচেয়ে বড় বিজয়ী। এরদোয়ান ইতিহাসের সঠিক পথেই আছেন, বিজয়ী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram