সুপার এইটের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্রকে ১০ উইকেটে উড়িয়ে দিয়ে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করলো ইংল্যান্ড। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ক্রিস জর্ডানের দুর্দান্ত এক হ্যাটট্রিকে ৭ বল বাকি থাকতে মাত্র ১১৫ রানে গুটিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই ব্যাট হাতে ঝড় তুলেন ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার। ৭টি ছক্কা ও ৬টি চারের সাহায্যে ৩৮ বলে ৮৩ রানের অতিমানবীয় ইনিংস খেলেন তিনি। আর তাতেই ৬২ বল হাতে রেখে ১০ উইকেটের জয় পায় ইংল্যান্ড।
রোববার (২৩ জুন) বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার। ম্যাচটিতে এক পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে ইংল্যান্ড। মার্ক উডের জায়গায় একাদশে ফেরেন ক্রিস জর্ডান। অপরদিকে অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামে যুক্তরাষ্ট্র।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা যুক্তরাষ্ট্র প্রথম ওভারেই উইকেট হারায়। রিচ টপলির বলে আট রান করে বিদায় নেন আন্দ্রিয়াস গাউচ। অপর ওপেনার স্টিভেন টেলরও টিকতে পারেননি। ১৩ বলে ১২ রান করে স্যাম কারানের শিকার হন তিনি। ওয়ানডাউনে নামা নিতিশ কুমার দলকে কিছুটা এগিয়ে নেন। তার ব্যাট থেকে আসে ২৪ বলে ৩০ রান। তাকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান আদিল রশিদ।
অধিনায়ক অ্যারন জোন্স এদিন দাঁড়াতেই পারেননি। মার্কিন এই তারকা বেশ সংগ্রাম করেছেন রান তুলতে। ১৬ বলে ১০ রান করে তিনিও বোল্ড হন রশিদের বলে। কোরি অ্যান্ডারসন ও হারমিত সিং মিলে যুক্তরাষ্ট্রকে টেনে নেন। তবে, ১৭ বলে ২১ রান করে স্যাম কারানের বলে আউট হন হারমিত। হারমিতের বিদায়ের পর সাজঘরে পথ ধরেন অ্যান্ডারসনও।
২৮ বলে ২৯ রান করে অ্যান্ডারজন পরিণত হন ক্রিস জর্দানের শিকারে। পরের বল আলী খান ডট দিলেও ওভারের তৃতীয় বলে উইকেট দিয়ে আসেন। ১৯তম ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে কেনজিগে ও সৌরভ নেত্রবালকারকে ফিরিয়ে হ্যাটট্রিকসহ মাত্র পাঁচ বলে চার শিকার করেন জর্দান। ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এটিই প্রথম হ্যাটট্রিক। শুধু বিশ্বকাপ নয়, টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটেও এটি ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম হ্যাটট্রিক। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের ইতিহাসে এটি ৯ম হ্যাটট্রিক। চলতি বিশ্বকাপে এটি তৃতীয় হ্যাটট্রিক।
শেষ পর্যন্ত সাদামাটা পুঁজিতেই থামতে হয় যুক্তরাষ্ট্রকে। ১০ রানে ৪ উইকেট নেন জর্ডান। রশিদ-কারান নিয়েছেন দুটি করে উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে পাওয়ার প্লে’তে ৬০ রান তোলে ইংল্যান্ড। এ সময় বাটলার ছিলেন বেশ মারমুখী। তিনি ২৬ বল খেলে ৪৪ রান করেন পাওয়ার প্লে’তে। এরপর তিনি আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। হারমিত সিংয়ের করা নবম ওভারে পাঁচ ছক্কা হাঁকিয়ে ৩২ রান তোলেন তিনি। তাতে বাটলারের রান ৩৬ বলে হয়ে যায় ৭৮। আর ইংল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৯ ওভারে ১১০ রান। দশম ওভারে চার বলে ৭ রান নিয়ে ৯.৪ ওভারেই দলের জয় নিশ্চিত করেন।
বাটলার ৩৮ বলে ৬টি চার ও ৭ ছক্কায় ৮৩ রানে অপরাজিত থাকেন। তার সঙ্গে ২১ বলে ২ চারে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন ফিল সল্ট।
এই জয়ে সুপার এইটের গ্রুপ ২’য়ে তিন ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে আসে ইংল্যান্ড। তাতেই নিশ্চিত হয়ে যায় তাদের সেমি-ফাইনাল। এক ম্যাচ খেলা দক্ষিণ আফ্রিকার পয়েন্টও ৪। এমনকি তাদের হারিয়ে ৪ পয়েন্ট বানানোর সুযোগ আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরও। তবে যে কোনো ক্ষেত্রেই অন্তত দ্বিতীয় স্থানে ইংল্যান্ড। নিট রান রেটে এগিয়ে আছে দলটি।