মেসি যখন মাঠ ছেড়ে যাচ্ছিলেন, তখন খেলা হয়েছে ৬৩ মিনিটের মতো। এমন সময়ে দুর্বার লিও মাঠ ছাড়বেন, তা কখন কে দেখেছেন? কারণ ম্যাচ শেষ হয়নি, আর এলএমটেন মাঠ ছেড়েছেন, এমন তো মনে পড়ে না অনেকেরই। কিন্তু মেসিকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে, বাস্তবতা ছিল এটাই।
যখন তিনি ডাগ আউটের দিকে হাঁটছিলেন, তখনও চোখ ছল ছল। সতীর্থদের সঙ্গে করমর্দন শেষে একটু থিতু হয়ে বসলেন। আর যেন নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না পাথরসম মানসিকতা নিয়ে প্রতিপক্ষের হৃদয়ে কাঁপন ধরানো মেসি।
ক্যামেরার লেন্স মেসিকে ধরে রাখছিল। মেসি কাঁদছেন। দু’হাত দিয়ে মুখের কিছুটা অংশ ঢাকার চেষ্টাও করছেন। কিন্তু ভেতরে যে ভাঙচুর চলছে, তা ঢেকে রাখতে পারলেন কই? সেই হৃদয়ের ভাঙচুরই চোখ বেয়ে বেরিয়ে এলো অ্যাকুয়াস হিউমার হয়ে।
হ্যাঁ, যারা সাত সকালে উঠে আমেরিকার হার্ড রক স্টেডিয়ামে নজর রেখেছিলেন, তারা তো সব দেখেছেনই। আর যারা ঘুমিয়ে ছিলেন, তাদের বলি। মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে অঝোরে কেঁদেছেন মেসি। সাথে নিঃসন্দেহে কেঁদেছেন তার কোটি ভক্ত। লিও’র অশ্রুসিক্ত চোখ দেখে কেউ কেউ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও লিখেছেন, ‘কেঁদো না মেসি, ট্রফি তোমারই হচ্ছে’।
২৬ মিনিটে হালকা চোট পান মেসি। ক্রস করতে গিয়ে তার পায়ে পা লাগে কলম্বিয়ান ডিফেন্ডারের। ফিজিও মাঠেই কিছুক্ষণ তার পরিচর্যা করেন। বাইরেও চলে যেতে হয়েছিল। তবে খানিক্ষণ বাদেই ফিরে আসেন।
৬৩ মিনিটে দিয়াজের কাছ থেকে বল কেড়ে নিতে গিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন মেসি। প্রথমে অনেকে ভেবেছিলেন, হয়ত হার্ড ট্যাকল। কিন্তু না। দেখা গেল পেশিতে টান লেগেছে মেসির। এরপর কোচ একেবারেই তাকে উঠিয়ে নেন। এরপরই ভক্তদের দেখতে হয় মেসির সেই কান্নার দৃশ্য!
লিও’র সেই কান্না যে হাসিতে রূপ নেবে, তা নিয়ে কিছুটা সংশয় ছিল। কারণ গোল হচ্ছিল না অতিরিক্ত সময়েও। অবশ্য তার সতীর্থরা অশ্রুসিক্ত বদনকে রূপ দেবেন হাসিমাখা মুখে, এমন বিশ্বাস ছিল পাড় ভক্তদের। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তা। লাউতারো মার্টিনেজের গোলই সেই উপলক্ষ্য এনে দেয়।
মেসিও তাই ম্যাচ শেষে হাসলেন। একেবারে দিলখোলা হাসি। যে হাসি বাঁধভাঙা-বাধনছাড়া। কারণটা এরইমধ্যে সবাই জেনে গেছেন। কোপা আমেরিকার এবারের ট্রফিটাও যে উঁচিয়ে ধরেছেন এই ফুটবল জাদুকর।