আজ ভারতের বিপক্ষে চলমান সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিচ্ছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। এ ম্যাচে জয় দিয়ে মাহমুদুল্লাহর বিদায়কে স্মরণীয় করে রাখতে চায় বাংলাদেশ।
প্রথম দুই ম্যাচ হেরে ইতোমধ্যে সিরিজ হাতছাড়া করেছে টাইগাররা। অন্যদিকে, জয়ের ধারা অব্যাহত রেখে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য ভারতের।
হায়দারাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায়।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারতের কাছে হোয়াইটওয়াশ হলেও টি-টোয়েন্টিতে সাফল্যের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে বিন্দুমাত্র লড়াই করতে পারেনি টাইগাররা।
গোয়ালিয়রে প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৭ উইকেটে হারে বাংলাদেশ। প্রথমে ব্যাট করে ১২৭ রান করে টাইগাররা। জবাবে ৪৯ বল বাকী রেখে ম্যাচ জিতে নেয় ভারত।
দিল্লিতে দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং, দু’বিভাগেই ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। টস জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্তটা কাজে লাগাতে পারেনি তাসকিন-মুস্তাফিজরা। বাংলাদেশ বোলারদের উপর তান্ডব চালিয়ে ৯ উইকেটে ২২১ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে ভারত।
বোলারদের পর ব্যাটারদের ব্যর্থতায় ৯ উইকেটে ১৩৫ রানে শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। ৮৬ রানের হারে এক ম্যাচ বাকী রেখে সিরিজ হার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
প্রথম দুই ম্যাচের মত তৃতীয় ও শেষ ম্যাচেও জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। কিন্তু সিরিজের শেষ ম্যাচে স্পটলাইটে থাকবেন মাহমুদুল্লাহ।
দিল্লিতে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে সাংবাদিকদের নিজের অবসরের কথা জানিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি বলেছিলেন, ‘এই সিরিজ শেষে টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিবো।’
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ১ ও দ্বিতীয় ম্যাচে ৩টি ছক্কায় ৩৯ বলে ৪১ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। বিদায়ী ম্যাচ খেলতে পারলে ১৪১টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে থামবেন তিনি। এখন পর্যন্ত ১৪০ ম্যাচে ৮টি হাফ-সেঞ্চুরিতে ২৪৩৬ রান ও ৪০ উইকেট শিকার করেছেন মাহমুদুল্লাহ।
বাংলাদেশের পক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ ম্যাচের রেকর্ডের মালিক মাহমুদুল্লাহ। ২০০৭ সালে নাইরোবিতে কেনিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক হয়েছিলো তার। ওয়ানডেতে আরও বেশি মনোযোগ দিতেই টি-টোয়েন্টি ছাড়ছেন মাহমুদুল্লাহ।
টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ডও মাহমুদুল্লাহর। তার অধীনে ৪৩ ম্যাচে ১৬টিতে জয় ও ২৬টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ শেষে টেস্ট ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ।
গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম ম্যাচের একাদশ থেকে একটি পরিবর্তন করেছিল বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচেও একাদশে পরিবর্তন এনে বেঞ্চের পরীক্ষা করতে চাইবে টাইগাররা। এক্ষেত্রে জাকের আলির জায়গা একাদশে সুযোগ পেতে পারেন মাহেদি হাসান। প্রথম দুই ম্যাচে যথাক্রমে ৮ ও ১ রান করেন জাকের।
প্রথম দুই ম্যাচে একই একাদশ নিয়ে খেলেছে ভারত। শেষ ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে রবি বিষ্ণোই, তিলক ভার্মা, জিতেশ শর্মা এবং হরষিত রানাদের সুযোগ দিতে পারে ভারত।
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড ভালো না বাংলাদেশের। ১৬ ম্যাচের মধ্যে ১৫টিতে হার ও ১টিতে জিতেছে টাইগাররা। ২০১৯ সালের সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয়টি এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের একমাত্র সাফল্য।
বাংলাদেশ দল
নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, জাকের আলি অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসান।
ভারত দল
সুর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, সঞ্জু স্যামসন, রিঙ্কু সিং, হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ, নিতিশ কুমার রেড্ডি, শিভম দুবে, ওয়াশিংটন সুন্দর, রবি বিষ্ণোই, ভারুন চক্রবর্তী, জিতেশ শার্মা, আর্শদিপ সিং, হার্শিত রানা ও মায়াঙ্ক যাদব।