স্পেনের মালাগা স্টেডিয়ামের বাইরে ইংরেজিতে বড় করে লেখা গ্রাসিয়াস রাফা। বাংলায় ‘ধন্যবাদ রাফা’। রাফা মানেই রাফায়েল নাদাল। মালাগা কেন তাকে ধন্যবাদ জানাল। কিসের জন্য। কারণ মঙ্গলবার ক্যারিয়ারের ১,৩০৭তম এবং শেষ ম্যাচ মালাগায় খেললেন নাদাল। এরপর দুটি শব্দে তাকে বিদায় জানাল স্পেনের মনোরম সমুদ্রসৈকতের শহর মালাগা।
নাদালের বিদায়ের মধ্য দিয়ে স্পেনের টেনিস আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের পতন হলো। ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের কাছে স্পেনের হার যে ম্যাচে, সেই ম্যাচটিই রাফার ক্যারিয়ারের দফারফা করে দিল। পেছনে পড়ে রইল ২২টি গ্র্যান্ড স্লাম খেতাব, ৯২টি এটিপি ট্যুর টাইটেল, দুটি অলিম্পিক স্বর্ণপদক, চারটি ডেভিস কাপ ফাইনাল জয়, ২০৯ সপ্তাহ বিশ্বের এক নম্বরের স্থান নিজের দখলে রাখা এবং টানা ৯১২ সপ্তাহ শীর্ষ দশে থাকার গরিমা।
নাদালের হার এবং স্পেনের বিদায় নেওয়ার বিষয়টা মাথায়ই ছিল না মালাগার পালাসিয়ো দে ডিপোর্টেস এরিনার হাজারবিশেক সমর্থকের। ‘ভামোস রাফা’ শব্দে মুখরিত ছিল স্টেডিয়াম। নাদাল কথাই বলতে পারছিলেন না। সতীর্থরাও তখন আবেগপ্রবণ।
পরে বললেন, ‘আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ। এত ভালোবাসা পেয়েছি যে বুঝতে পারছি না কোথা থেকে শুরু করব।’ একটু থেমে বললেন, ‘২০ বছরের ক্যারিয়ারে বরাবর আপনারা সাহস জুগিয়েছেন, পরের পয়েন্ট জিততে সাহায্য করেছেন। কঠিন মুহূর্তে আমার পাশে থেকেছেন। আমি লড়াইয়ের সাহস পেয়েছি। স্পেন ও গোটা বিশ্বে সমর্থকদের ভলোবাসা পেয়ে আমি আপ্লুত।’
নাদাল জানালেন, জোর করে নিজেকে না টেনে পরের প্রজন্মের জন্য দরজা খুলে দেওয়ার দরকার ছিল। বলেছেন, ‘সত্যি কথাটা হলো, কোনো ক্রীড়াবিদই চায় না এই মুহূর্ত কোনো দিন আসুক। আমি টেনিস খেলতে গিয়ে কখনো ক্লান্ত হই না। কিন্তু শরীর আর চাইছে না। পরিস্থিতি মেনে নিতেই হবে। আমি কৃতজ্ঞ। নিজের পছন্দের একটা বিষয়কে পেশা বানাতে পেরেছি। যতদিন ভেবেছিলাম তার থেকে বেশিদিন খেলেছি।’
কোর্টের মাঝে নাদাল দাঁড়িয়ে কথা বলার পর বড় পর্দায় ভেসে উঠল একের পর এক ভিডিওবার্তা। কে ছিলেন না সেখানে। রজার ফেদেরার, নোভাক জোকোভিচ, অ্যান্ডি মারে, সেরেনা উইলিয়ামস, আন্দ্রে ইনিয়েস্তা, ইকার ক্যাসিয়াস, ডেভিড বেকহ্যাম, রদ্রি আরও কত নাম।