ব্যুরো চীফ, কুমিল্লা: পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থান নিয়েছেন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেল ৫ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মহাসড়কে অবস্থান নেন তারা। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। পরে মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে কুবি শিক্ষার্থীর উপর হামলার বিচারের দাবি জানান তারা।
বিকেল সোয়া ৬ টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে অবস্থান করছিলেন। মহাসড়কে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে করে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের দুই লাইনে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়নামতি হাইওয়ে থানার ওসি ইকবাল বলেন, আন্দোলনের ফলে ঢাকা এবং চট্টগ্রামমুখী দুই লেনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে এর আগে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মহাসড়কের দিকে আসতে থাকলে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশসহ ১০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটাবিরোধী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে রওনা হন। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কার্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ তাদের বাঁধা দেয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা পুলিশকে দেখে ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দিতে থাকলে পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। শিক্ষার্থীরা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দুইজন সাংবাদিকও রয়েছেন। পরে পুলিশের বাঁধা উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের অবস্থান নিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, আহত ৭জন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে।
আন্দোলনরত কয়েকজন শিক্ষার্থীরা জানান, বিকেলে কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে শিক্ষার্থীরা ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার কোটবাড়ির দিকে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশের বাঁধার মুখে পড়ে। বাঁধা উপেক্ষা করে মহাসড়কের দিকে যেতে চাইলে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া–পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার আশরাফুজ্জামান বলেন, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশকে দেখে উত্তেজনামূলক স্লোগান দিতে থাকে। যার ফলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা নির্দেশ অমান্য করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দিকে চলে আসে। শিক্ষার্থীরা মহাসড়কে থাকলেও পরিস্থিতি বর্তমানে শান্ত রয়েছে। আমাদের পুলিশের চার জন সদস্য আহত রয়েছে।