শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা: কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা ও কারফিউয়ের প্রভাবে স্বাভাবিক গতি হারিয়েছে কুমিল্লার দোকান পাট ও বিপণি বিতানগুলো। কারফিউ জারি হওয়ার প্রথম চারদিন দোকান পাট বন্ধ থাকলেও গত বুধবার থেকে এগুলো খুলতে শুরু করেছে। কিন্তু ব্যবসায় এখনো স্বভাবিক গতি ফিরেনি। বিক্রেতারা পন্যের পসরা সাজিয়ে রাখলেও ক্রেতা নেই। বেচাকেনা তলানিতে ঠেকেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ব্যবসায়ীদের পথে বসতে হবে, এই অবস্থা থেকে উত্তরণের অপেক্ষায় আছেন ব্যবসায়ীরা।
সোমবার কুমিল্লা নগরীর রাজগন্জ, চকবাজার, মনোহরপুর, কান্দিরপাড়, রেইসকোর্স ও বাদুরতলা এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের অর্ধশত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এমন চিত্র পাওয়া যায়।
কুমিল্লা খন্দকার হক টাওয়ারের স্বর্ণকমল দোকানের কর্মচারী রিপন সাহা বলেন, গত তিন দিন ধরে এক টাকা বিক্রি করতে পারিনি। গতকাল থেকে মার্কেট সকাল সন্ধ্যা খোলা থাকলেও ক্রেতা আসছে না। মানুষ ভয় পায়। গ্রামের মানুষ শহরে আসতে ভয় পাচ্ছে। সাত্তার খাঁন কমপ্লেক্স আমার আরো একটি দোকান আছে। সব জায়গায় একই অবস্থা।
কুমিল্লা টপটেন শাখার ম্যানেজার মোঃ মিজানুর রহমান জানান, বিক্রয় একেবারেই নেই। গতকাল সকাল ১০ থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত শোরুম খোলা ছিল কিন্তু কাস্টমার হাতে গোনা কয়েকজন আসছে। আমাদের শোরুমে সকল ধরনের কাপড়, কসমেটিক, জুতা, ব্যাগ আছে তারপরও কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউর কারণে বেচাকেনা তলানিতে। ফ্যান্টাসি ক্লথ স্টোরের বিক্রেতা বাবলু বলেন, দুপুর ১২ টা বাজে এখনো বিসমিল্লাহ করতে পারেনি। মার্কেটের খুব খারাপ অবস্থা।
কুমিল্লা রাজগন্জ সুজন টিন ঘর এর সত্ত্বাধিকারী মোঃ মোবারক হোসেন বলেন, কোটা সংস্কার ও কারফিউর কারণে ব্যবসা মন্দাভাব। স্বাভাবিক সময়ের বিক্রি অর্ধেকের চেয়ে নিচে নেমে আসছে। কুমিল্লা ইস্টার্ন ইয়াকুব প্লাজার জুতা ব্যবসায়ী আবু মুসা বলেন, করোনার সময় ব্যবসার যে অবস্থা হয়েছিল এখন আবার কোটা আন্দোলন ও কারফিউর কারণে একই অবস্থা। দেশে ব্যবসা করে টিকে থাকতে পারব না।
কুমিল্লা মনোহরপুর এলাকায় ঈশা ক্লথ স্টোরের সত্ত্বাধিকারী মোঃ ইদ্রিস মিয়া বলেন, ব্যবসার অবস্থা সোচনীয়। মানুষ আসে না শহরে এজন্য বিক্রি নেই। ভালো মন্দ কিছু বলতে পারছি না, কেন পারছি না এটা আপনি জানেন।
কুমিল্লা ইস্টার্ন প্লাজা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, ব্যবসায়ীদের অবস্থা ভালো না। কিছুদিন তো দোকান পাট বন্ধ ছিল। গতকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকলেও ক্রেতা নেই। মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাজ করছে।