রাজধানী ঢাকার ওয়ারী ও গাজীপুরের টঙ্গীতে বিভিন্ন অভিযোগে আটজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল সূত্র এই তথ্য দেয়। গতকাল সকাল ৬টার দিকে ওয়ারী এলাকায় ধর্ষণের অভিযোগে তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তাঁরা হলেন সাইদুল ইসলাম ইয়াসিন (১৯), সাঈদ আরাফাত শরীফ (২০) এবং অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি। নিহত ইয়াসিন মাদরাসায় পড়তেন, যাত্রাবাড়ীর ধলপুর বউবাজারের বাসিন্দা।
তাঁর মা শিল্পী আক্তার বলেন, ‘সকালে একজন ফোন দিয়ে জানান আপনার ছেলের অবস্থা ভালো না, দ্রুত যাত্রাবাড়ী থানায় আসেন। ছেলেকে মুমূর্ষু অবস্থায় গাড়িতে করে হাসপাতালে নেওয়ার সময়ও আমার ছেলে কথা বলছিল।
বলছিল ওদের মিথ্যা অভিযোগে মারধর করা হয়েছে। এরপর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায়। পরে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’
সাঈদকে হাসপাতালে নিয়ে আসা স্কাউট সদস্য সম্রাট শেখ বলেন, ‘সায়েদাবাদ এলাকায় গণধর্ষণের অভিযোগে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা তিনজনকে পিটুনি দেয় বলে জানতে পারি।
গণপিটুনি খাওয়া অজ্ঞাতপরিচয় পুরুষের লাশ পাওয়া যায় যাত্রাবাড়ীর মাছের আড়তের কাছে। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
ওয়ারী হাটখোলা এলাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে বিরোধে গতকাল সকালে দুই ভাইকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন আলামিন ভুইয়া (৪২) এবং তাঁর ছোট ভাই নুরুল আমিন (৩৫)।
আলামিন ভুইয়ার স্ত্রী মুনমুন অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী রিপন নামের একজনের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। কিন্তু রিপন তা বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন না। এ নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ রিপনের সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের কারণে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছে।
মুনমুনের ভাষ্য মতে, হত্যাকাণ্ডের সময় আলামিন ভুইয়ার সঙ্গে তাঁর ছোট ভাই নুরুল আমিন ছিলেন। তবে আলামিন ভুইয়ার মরদেহের সঙ্গে নুরুল আমিনের মরদেহ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আসেনি। নুরুল আমিনের মরদেহ বিকেল ৩টার দিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাঁর শ্যালক জোবায়ের হোসেন।
টঙ্গী পূর্ব থানার ওসি রাফিউল করিম রাফি জানান, টঙ্গী এলাকায় তিনজনকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এঁদের মধ্যে একজনের নাম সুজন সরকার (৪২)। অন্য দুজনের নাম জানা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গতকাল সকালে টঙ্গী বাজার এলাকায় পেট্রল পাম্পের সামনে জনতা তিন ব্যক্তিকে আটক করে। এর মধ্যে সুজন সরকার কৌশলে পালিয়ে যান। অন্য দুজনকে কয়েক দফা পেটানো হয়। পরে তাঁরা মারা গেলে লাশ ভ্যানগাড়িতে করে টঙ্গী পূর্ব থানার গেটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শিলমুন আকিজ বেকারির পেছনে একটি ঝিলে ভাসমান অবস্থায় সুজনের লাশ উদ্ধার করা হয়।