রাজশাহীতে সরকার পতনের একদফার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা আলী রায়হানের (২৮) মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। সোমবার রাতে নিহত আলী রায়হানের ছোট ভাই রানা ইসলাম (২১) বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। রানা ইসলামের বাড়ি রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার মঙ্গলপাড়া গ্রামে। বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, মামলায় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সদ্য সাবেক সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। এজাহারে মোট ৫০ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। এছাড়া আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের আরও ১ হাজার থেকে ১২০০ জন অজ্ঞাত নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিদের মধ্যে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার, তার ভাই জেডু সরকার, নগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি, যুবলীগকর্মী জহিরুল হক রুবেল, নগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রকি কুমার ঘোষ ও শফিকুজ্জামান শফিক; সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাজীব, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ডা. সিরাজুম মুবীন সবুজ, রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাশিক দত্ত, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম জাফর, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল গালিব ও সাবেক সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার নাম আছে।
এছাড়া রাজশাহী সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার, মাহাতাব উদ্দীন, তৌহিদুল হক সুমন, শাহাদত হোসেন শাহু, আবদুল মমিন, সরিফুল ইসলাম বাবু, নিযাম-উল-আযীম ও আরমান আলী, যুবলীগ নেতা নাহিদ আক্তার নাহান, আওয়ামী লীগ নেতা আতিকুর রহমান কালু ও আনোয়ার হোসেন রাজার নাম রয়েছে আসামিদের তালিকায়।
বোয়ালিয়া থানার ওসি এসএম মাসুদ পারভেজ আরও জানান, সোমবার রাতেই মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিরা আগে থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছেন। এখন তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হবে।
গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগে নগরীর আলুপট্টি এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হন মহানগর ছাত্রশিবিরের সাংগঠনিক সম্পাদক আলী রায়হান। এরপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৮ আগস্ট তিনি মারা যান। পরদিন রাজশাহী কলেজ মাঠে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান তার জানাজার নামাজ পড়ান।