টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পূর্বের ভাঙ্গা বাঁধের ২৪টি স্থান দিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে পানি। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ৭০ গ্রামে প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১৩ হাজার পরিবার। বন্ধ হয়ে গেছে সড়ক যোগাযোগ। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) মুহুরী নদীর পানি বিপৎসীমার ৫৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ফেনী জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, ফেনীর মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পূর্বের ২৪টি স্থান দিয়ে পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার ৭০টি গ্রামে পানি প্রবেশ করে। এতে ১৩ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত চব্বিশ ঘণ্টায় ৩১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় যা এ যাবত কালের সর্বোচ্চ।
ফেনী-পরশুরাম আঞ্চলিক মহাসড়কের ফুলগাজী উপজেলা বাজারে উত্তর অংশে হাটু পরিমাণ পানি থাকায় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলের পর থেকে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় জীবন বাঁচাতে ছোট শিশুকে কোলে নিয়ে নৌকায় করে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে চলে যেতে দেখা যায় স্থানীয়দের।
এ ব্যাপারে ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার জানান, পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলার বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জনগণের নিরাপত্তা ও প্রয়োজনীয় খবারের ব্যবস্থা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
ফুলগাজীর সদর ইউনিয়নের ঘনিয়ামোড়ার গ্রামের কৃষক মো. জামাল উদ্দিন জানান, আমার বাড়ি থেকে আসার পথে এক গলা পানি ও ঘরে কোমর পরিমান পানি উঠেছে। আমার তিনটা গরু ছিল একটা গাভি পানিতে ডুবে গরু মারা গেছে। বাকিগুলোও যায় যায় অবস্থা। আমার ৪৫ বছর বয়সে এত পরিমান পানি দেখি নাই।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, প্রতিবছর এসময় এলেই কয়েক দফা বন্যার পানি উঠে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির কারণে আমরা এ মাসে কয়েকবার পানিতে ডুবে ভোগান্তিতে পড়ছি। আমরা ত্রাণ চাই না, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ চাই।
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদ শাহারিয়ার জানান, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে পূর্বের ভাঙ্গা বাঁধের ২৪টি স্থান দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। পানি নেমে গেলে বাঁধগুলো মেরামত করা হবে।