এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় সাত বছরের শুভকে অপহরণ ও হত্যা মামলায় রেজাউল করিম ফকির নামে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে জয়পুরহাটের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. নুরুল ইসলাম এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষণার পরপরই রেজাউল করিম ফকিরকে পুলিশ পাহারায় জয়পুরহাট জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোকুল চন্দ্র মন্ডল জানান, রেজাউল করিম ফকির (৪৫) কালাই উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের সাত্তার ফকিরের ছেলে। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন, যেখানে তিনি এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছেন। আদালত সেই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে রেজাউল করিমকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। যার মধ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের জন্য তাকে গলায় ফাঁসি দিয়ে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেওয়া হয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, ২০১৭ সালের ৩ মার্চ কালাই উপজেলার মুন্সিপাড়া গ্রামের আব্দুল গফুর তোতার সাত বছর বয়সী পুত্র শুভ, স্থানীয় কাকলী শিশু নিকেতনের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ছিল। বাড়ির পাশে অন্য বালকদের সঙ্গে খেলছিল। হঠাৎ শুভ নিখোঁজ হয়ে গেলে পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজতে শুরু করে। বিকাল ৩টার দিকে রেজাউল করিম ফকির শুভর মা আলেয়া খাতুনকে ফোন করে জানায়, যে শুভকে অপহরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে শুভর বাবা আব্দুল গফুর তোতা বাড়ি ফিরে আসেন এবং রেজাউল করিমের ফোন নম্বরসহ বিষয়টি কালাই থানাকে অবহিত করেন।
পরের দিন ৪ মার্চ বিকালে বাড়ির পাশের খড়ের পালার ভেতর শুভর নিথর দেহ পাওয়া যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। এ ঘটনায় শুভর বাবা আব্দুল গফুর বাদী হয়ে কালাই থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। তদন্তের পর পুলিশ কল লিস্টের ভিত্তিতে রেজাউল করিম ফকিরকে গ্রেফতার করে। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৭ এপ্রিল কালাই থানার উপপরিদর্শক সাইদুর রহমান রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় আদালত ১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন এবং রেজাউল করিমের ১৬৪ ধারায় দেওয়া স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে তাকে দণ্ডবিধির ৩০২/২০১ ধারার অধীনে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।