জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফের নাফনদী থেকে ৭ রোহিঙ্গা নারী-শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মায়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় নৌকাডুবিতে এসব রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটি সংলগ্ন লেদা এলাকায় নাফ নদীতে ভাসমান অবস্থায় এসব লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। মৃতদের মধ্যে চার শিশু, এক নারী ও দুই পুরুষ। পরে লাশগুলো উদ্ধারের পর আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সংগঠনের পক্ষ থেকে দাফন করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শাহপরীর দ্বীপ নাফনদী জেটিঘাট এলাকা থেকে পাঁচটি ও লেদা এলাকা থেকে দুটি লাশ উদ্ধার হয়। লাশগুলো পানিতে ভেসে এসেছিল। গত কয়েক মাস ধরে মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে মর্টারশেল ও শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণ ঘটছে। থেমে থেমে ওপার থেকে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। মর্টারশেল, শক্তিশালী গ্রেনেড-বোমার বিস্ফোরণের শব্দে এ পারের বাড়িঘরও কেঁপে উঠছে। এতে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত টেকনাফের বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের করছেন। অনেক রোহিঙ্গা মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসতে গিয়ে নদীতে ডুবে মারা যায়।
এনজিও কর্মী মাহবুব আলম মিনার বলেন, আমাদের ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেক আজকে চার শিশুসহ সাত রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাদের দাফন করা হয়। এর মধ্যে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী ছিলেন। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে মায়ানমার থেকে পালিয়ে আসা গুলিবিদ্ধ ও নৌকাডুবিতে নিহত ২৮৬ জনের লাশ দাফন করেছি আমরা।
টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, নাফনদীতে কয়েকজন রোহিঙ্গার লাশ ভেসে এসেছে। সেগুলো স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে দাফন করেছেন।
গত ৬ আগস্ট নৌকাডুবির ঘটনায় নাফ নদী ও সাগরে ভাসমান ৫৪ জন রোহিঙ্গার লাশ উদ্ধার করা হয়েছিল। বিষয়টি জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি ওসমান গনি।
ওসি বলেন, মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে চলমান যুদ্ধের মুখে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছেন রোহিঙ্গারা। গেলো সোমবার রোহিঙ্গা বহনকারী একটি নৌকা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশকালে নাফনদীতে ঝড়ো হাওয়ার কবলে পড়ে ডুবে যায়। ধারণা করা হচ্ছে উদ্ধার লাশগুলো ওই নৌকাডুবি ঘটনার হতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, নাফনদীর তীর থেকে উদ্ধার ৭ মরদেহের কোনো ধরনের পরিচয় শনাক্ত হয়নি। তবে দিল মোহাম্মদ নামে একজন রোহিঙ্গা নাগরিক মরদেহগুলোর নিকট আত্মীয় দাবি করে দাফনের জন্য ব্যবস্থা করেছেন।