শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: গত ২২ আগস্ট দিবাগত রাতে গোমতী নদীর পানি বিপদ সীমার ১৩৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার পরই ভেঙ্গে যায় গোমতী বাঁধের বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়া অংশ। এই বাঁধ ভাঙ্গার ফলে প্লাবিত হয় বুড়িচং, ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা। আংশিক প্লাবিত হয় আদর্শ সদর ও দেবিদ্বার উপজেলা। এই চার উপজেলার প্রায় ৪ লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়।
মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ বুড়িচং উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। দূর্গম এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র গুলো হওয়ায় ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মক ভাবে। অধিকাংশের বেশি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোর নিচতলা পানিতে ডুবে আছে।
এদিকে, প্রশাসনের কিছুটা নির্লিপ্তার কারণে ত্রাণ বিতরণে সমন্বয়হীনতা লক্ষ্য করা গেছে শুরুতেই। এজন্য অভিযোগ প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
অপরদিকে, ২৩ আগস্ট শনিবার থেকেই গোমতী নদীর পানি ক্রমান্বয়ে কমছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যা পোনে ৭টা পর্যন্ত গোমতী নদীর পানি ছিল বিপদ সীমা থেকে ৩৬ সেন্টিমিটার উপরে। গোমতী নদীতে পানি কমলেও প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। নতুন প্লাবিত হওয়া গ্রামের মানুষ গুলো খুঁজছে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। গতকাল রোববার নতুন ভাবে যে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বুড়িচং উপজেলার বাকশিমূল ইউনিয়নের পিতাম্বর গ্রাম।
গতকাল সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, প্রবল স্রোতে এই গ্রামে পানি ঢুকছে। প্লাবিত হচ্ছে বাড়ি ঘর। স্বেচ্ছাসেবকরা নৌকার অভাবে কলাগাছের ভেলা বানিয়ে মহিলা ও শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিচ্ছে।
গোমতী নদীতে আর ভাঙ্গনের আশংকা আছে কিনা জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী পরিচালক ওয়ালিদ উজ জামান বলেন, গোমতী নদীর স্বাভাবিক পানির প্রবাহ হচ্ছে ১১.৩ সেন্টিমিটার। বর্তমানে এখন (সোমবার সন্ধ্যা পোনে ৭টা) গোমতী নদীতে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বিপদ সীমার ৩৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে। তিনি বলেন, পানি কমলেও বাঁধ কিন্তু আশংকামুক্ত না। কারণ, স্বাভাবিকের চেয়ে যে পানি গুলো উপরে আছে সেগুলো তো কোথাও না কোথাও দিয়ে সরতে হবে। তিনি বলেন, আর বড় ধরনের বৃষ্টি না হলে আর পাহাড়ি ঢল না আসলে পানি বাড়ার কোন সম্ভাবনা নেই। তবে সবাইকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকতে হবে। যেহেতু গোমতী এখনো বিপদমুক্ত নয়।