গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ৩জন নিহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামী করে ৬৪ জনের নাম উল্লেখ ও ২০০/২৫০জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে আদালতে মামলা করা হয়েছে। রোববার (২৫ আগস্ট) বিকেলে ময়মনসিংহ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মামলাটি গ্রহণ করা হয়। মামলাং ৪৮২/২০২৪।
ময়মনসিংহ আদালতের পরিদর্শক মো. সফিকুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আদালত বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ করেন। এ ছাড়া উক্ত ঘটনায় ইতোপূর্বে কোনো মামলা হয়েছে কী না তার অবস্থা জানাতে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়ে গৌরীপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।’
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুর রহিম আকন্দ বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এক নম্বর আসামী করা হয়। এই মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্যান্য আসামীরা হলেন- শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা, সাবেক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, গৌরীপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ সাহা, সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলামসহ ৬৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আরও ২৫০ জনকে আসামী করা হয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ২০ জুলাই ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের কলতপাড়া এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আন্দোলনকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধলে গুলিবিদ্ধ হয়ে চূড়ালি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় একটি তেলের মিলের শ্রমিক বিপ্লব হাসান (২০), রামগোপালপুর ইউনিয়নের দামগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও মাদ্রাসা শিক্ষক নূরে আলম সিদ্দিকী ওরফে রাকিব (২০) ও মইলাকান্দা ইউনিয়নের পূর্ব কাউরাট গ্রামের বাসিন্দা ও শম্ভূগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জোবায়ের আহমেদ (২১) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। ওই দিন আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ তিনজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। ওই তিন তরুণ মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বাক্ষী করে আদালতে মামলাটি করা হয়।
এদিকে তিন তরুণ মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা না করায় গৌরীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল আলম বাদী হয়ে ২২ জুলাই থানায় একটি মামলা করেন। অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করে হত্যা মামলার ধারায় এই মামলাটি রুজু করা হয়।
গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আদালতে করা মামলার আদেশের কোন কপি পায়নি। কপি হাতে পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।