এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: মিরসরাই উপজেলার সন্তান জেডএন্ডএস গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন সিআইপির অনন্য উদ্যোগে বন্যার্তদের মুখে হাসি ফুটেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় মিরসরাই উপজেলার ১২ টি ইউনিয়নের প্রায় দেড় লক্ষাধিক মানুষ অসহায় হয়ে পড়েছে। অনেকেই পরনের কাপড় ছাড়া কোনকিছুই রক্ষা করতে পারেননি। একদিকে কোনকিছু রক্ষা করতে না পারার হতাশার মাঝে এক কাপড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া বন্যার্তদের খাবার নিয়েও দুশ্চিন্তার যেন শেষ ছিল না।
এমতাবস্থায় মিরসরাই উপজেলার সন্তান জেডএন্ডএস গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন সিআইপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে রান্না করা খাবার ও শুকনো খাবার পেয়ে বন্যার্তদের মুখে হাসি ফুটেছে। তিনি বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বন্যা শুরুর দিন থেকে প্রতিদিন দুপুর ও রাতের প্রায় দেড় হাজার জনের মাঝে খাবার সরবরাহ করে আসছেন। যেসকল আশ্রয়কেন্দ্রে দুই বেলা খাবার সরবরাহ অব্যাহত রেখেছেন সেগুলো হলো ওচমানপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, ওচমানপুর কিন্ডারগার্টেন মাদ্রাসা, ওচমানপুর ইউনুছিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ড্রীম হোম কমিউনিটি সেন্টার, দক্ষিণ সাহেবপুর, পূর্ব সাহেবপুর।
এছাড়া ইতিমধ্যে তিনি শুকনো খাবার সরবরাহ করেছেন ওচমানপুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের ৩০০ পরিবার, ৩ ওয়ার্ডের ১০০ পরিবার, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের ৪০০ পরিবার, ধুম ইউনিয়নের ৪০০ পরিবার, জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ২৮০ পরিবার, ইছাখালী ইউনিয়নের ৪০০ পরিবার, বারইয়ারহাটে ১৫০ পরিবার। এছাড়া জোরারগঞ্জ, ওচমানপুর, কাটাছরা, মিরসরাই সদর, মিঠানালা ইউনিয়নের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনকে আড়াই লক্ষাধিক টাকার অনুদান প্রদান করেছেন বন্যার্তদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী ও উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য।
আশ্রয়কেন্দ্রে অংশ নেওয়া অসংখ্য বন্যার্তরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, জিয়া উদ্দিন সিআইপি অনেক বড় মনের মানুষ। শুধু এই বন্যার সময় না তিনি বিভিন্ন সময়ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আমরা উনার জন্য দোয়া করি আল্লাহ যেন উনার এই কার্য্যক্রমের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার জন্য তৌফিক দান করে।
সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অভিনন্দন ক্লাবের সভাপতি আবু হাসান রাসেল জানান, ফেনী নদীর উপকূলে অবস্থিত মিরসরাইয়ের ওচমানপুর ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নে ফেনী নদীর পানি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় ব্যাপক প্রভাব পড়ে। এতদ অঞ্চলের বন্যার্তদের জন্য এই ইউনিয়নের কৃতি সন্তান জেডএন্ডএস গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন সিআইপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪ শত মানুষের জন্য আমাদের সংগঠনের মাধ্যমে ত্রাণ দিয়েছেন। ত্রাণ পেয়ে খুশি বন্যার্তরা।
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রিয়াদ জানান, ওচমানপুর ইউনিয়নের ১ ও ২ নং ওয়ার্ডের মরগাং সাইক্লোন শেল্টারের আশপাশের ৩ শত পরিবারের জন্য শুকনো খাবার দিয়েছেন জেডএন্ডএস গ্রুপের চেয়ারম্যান জিয়া উদ্দিন সিআইপি। বর্তমান সংকটময় মুহুর্তে উনার এই ত্রাণ সহায়তায় খুশি বন্যার্তরা।
স্থানীয় বাসিন্দা সাঈদ মোহাম্মদ এবং তুহিন বড়ুয়া জানান, আমাদের জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের গোপিনাথপুর, দেওয়ানপুর ও তেমুহানী গ্রামের বন্যার্ত ৩০০ পরিবারের জন্য জিয়া উদ্দিন সিআইপির ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সামগ্রী পেয়েছি। এই করুন পরিস্থিতিতে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমরা উনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
স্থানীয় বাসিন্দা মেজবাহ ভূ্ইঁয়া বলেন, দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী, মিরসরাই উপজেলার ওচমানপুর ইউনিয়নের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন সিআইপি প্রবাসে থাকলেও তাঁর মনটা পড়ে রয়েছে নিজ জন্মভূমি মিরসরাইয়ে। স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা শুরু হওয়ার পর থেকে তিনি প্রতিনিয়ত সবার খোঁজখবর নিচ্ছেন। মানুষের জন্য নিজের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ করে যাচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবারের ব্যবস্থা করে যাচ্ছেন। আশ্রয়কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে তা বন্টন করেছেন। বিশেষ করে ওচমানপুর ইউনিয়নের সব আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থা করছেন প্রতিদিন। যতদিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না, ততদিন তিনি এই মানবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন সিআইপি বলেন, জীবনে কখনো আমাদের এলাকায় এমন ভয়াবহ বন্যা দেখিনি। প্রবাসে থাকলেও এলাকার বানবাসী মানুষের অমানবিক কষ্ট দেখে চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিনা। আমি প্রবাসে থাকলেও মন পড়ে রয়েছে এলাকায়। আমার ক্ষুদ্র সামর্থ্য থেকে বানবাসী অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। মহান আল্লাহর দরবারে এই দোয়া করছি সকল বানবাসী মানুষ যেন দ্রুত মুক্তি পায়, সুস্থ থাকে।