আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলার পশ্চিম গাজীপুর এলাকার জিনবুনিয়া খালের ফ্লাসিং স্লুইজগেট দখল করে বাড়ী নির্মাণ করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী বাহাদুর মৃধা, মজিবুর মৃধা ও তাদের সহযোগীরা। ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনে তারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে দিয়েছে। এতে গলাচিপা উপজেলার গোলখালী, নলুয়াবাগী, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর ও হলদিয়া ইউনিয়নের শত শত যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ভোগান্তিতে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। দ্রুত অবৈধভাবে স্লুইজ গেট দখল করে বাড়ী নির্মাণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাটার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ১৯৬৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড আঠারোগাছিয়া ইউনিয়ন বাসীদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করেন। ওই বাঁধের ওপরে ৩০ বছর আগে সড়ক ও জনপথ পাকা রাস্তা নির্মাণ করে। ওই রাস্তা দিয়ে গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী, গোলখালী, আঠারোগাছিয় ইউনিয়নের গাজীপুর, হলদিয়া ইউনিয়নের শত শত যানবাহন ও হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করে। গাজীপুর এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় সরকার গত ৩৫ বছর আগে জিনবুনিয়া খালে ফ্লাসিং স্লুইজ গেট নির্মাণ করে।
কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী বাহাদার মৃধা, মজিবুর মৃধা ও তাদের সহযোগী ওই স্লুইজগেট আটকে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়। পরে ওই স্লুইজগেট দখল করে বাড়ী নির্মাণ করেছেন তারা। এতে পশ্চিম গাজীপুর এলাকার পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই প্রভাবশালী ও সফিউল মৃধা পশ্চিম গাজীপুর জিনবুনিয়া খালের আজাহার মাষ্টার বাড়ীর সামনে থেকে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁঁধ কেটে দিয়েছে। এতে গলাচিপা উপজেলার নলুয়াবাগী, গোলখালী, আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের গাজীপুর ও হলদিয়া ইউনিয়নে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ। দ্রুত তদন্ত করে জিনবুনিয়া খালের ফ্লাসিং স্লুইজ দখল মুক্ত এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁঁধ কেটে দেয়ার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবী করেছেন এলাকাবাসী।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, স্থানীয় ২০—২৫ জন মানুষ বেকু মেশিন লাগিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁঁধ কেটে দিচ্ছে। পাশে শত শত যানবাহন দাড়িয়ে আছে। পশ্চিম গাজীপুর গ্রামের রেজাউল ইসলাম বলেন, পানি নিষ্কাশনের জন্য স্থানীয় সরকার গত ৩৫ বছর আগে জিনবুনিয়া খালে ফ্লাসিং স্লুইজ গেট নির্মাণ করে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী বাহাদার মৃধা, মজিবুর মৃধা ও তাদের সহযোগীরা ওই স্লুইজগেট আটকে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেয়। পরে ওই স্লুইজগেট দখল করে বাড়ী নির্মাণ করেছেন তারা। বর্তমানে পানি নিষ্কাশনের জন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাধ কেটে দিয়েছে। এতে হাজার হাজার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, ওই প্রভাবশালীরা বর্তমানে আমার পৈত্রিক সম্পত্তি কেটে খাল খনন করছে। তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার শাস্তি দাবী করছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, যারা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে পানি নিষ্কাশন করছে তারাই জিনবুনিয়া খালের ফ্লাসিং স্লুইজগেট দখল করে বাড়ী নির্মাণ করেছেন।
স্থানীয় সফিউল মৃধা বলেন, উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে পানি নিষ্কাশনে আমরা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেটে দিয়েছি। তবে স্লুইজগেট দখল করে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে রেখেছেন কেন এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেনি?
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁঁধ কেটে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়নি। যারা কেটেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী মোঃ রাকিব বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কাটার কোন বিধান নেই। যারা কেটেছে তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।