বন্যাদুর্গত নোয়াখালীর ৮ উপজেলা ও ৭ পৌরসভায় পানি কমতে শুরু করলেও অনেক এলাকার ঘরবাড়ি এখনও ২ ফুট পানির নিচে। দুর্গত এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি। ভেঙ্গে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগ।
নোয়াখালীতে পানি কিছুটা কমলেও আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি এখনও তৈরি হয়নি। বেশির ভাগ নিচু এলাকায় এখনও পানিবন্দি কয়েক লাখ মানুষ। তাই বাধ্য হয়েই এখনও থাকতে হচ্ছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
এদিকে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ফিরতে পারলেও দুর্ভোগ কমেনি তাদের, বাড়িঘর কিছুই নেই আগের মতো। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ শহরের অনেক এলাকায় ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। বন্যার পানিতে ময়লা আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ায় বাড়ছে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ।
বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বেগমগঞ্জ উপজেলায়, প্রায় ১২শ’ কোটি টাকা ক্ষতি নিরুপণ করেছে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে, তবে পানি কমতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে।
এবারের বন্যায় নোয়াখালী ৮ উপজেলা ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ মানুষ। জেলার ১২৬৯ আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে ২ লাখ ৩৩ হাজার ২শ’ ৬৩ জন মানুষ। হাজার হাজার মানুষ হারিয়েছেন মাথা গোঁজার আশ্রয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক সৈয়দ মহিউদ্দিন জানান, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। গত ২৪ ঘন্টায় ডায়ারিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতলে ভর্তি হয়েছে ১৪২ জন। বর্তমানে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ৩০৫ জন। তবে নুতন করে সাপে দংশন করা কোনো রোগী আসেনি।
জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, বন্যার পানি দিন দিন কমতে থাকায় জেলার ১২৬৯টি আশ্রয় কেন্দ্র থেকে মানুষ বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে। বাড়ি ফিরে তাদের ঘর এবং বাড়ি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করেছে। প্রত্যেককে প্রয়োজনীয় পানি বিশুদ্ধিকরণ ট্যাবলেট ও স্যালাইন দেওযা হচ্ছে। বন্যা কবলিত এলাকায সরকারিভাবে ১শত২৪টি ও বেসরকারিভাবে ১৬টি মেডিকেল টিম কাজ করছে।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।