গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: যৌতুকের বলি হয়েছে নার্গিস আক্তার (২০) নামের এক গৃহবধূ। স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির চাহিদা মোতাবেক ওই গৃহবধূ যৌতুক এনে দিতে না পারায় তাকে মারধর করে জোরপূর্বক বিষপান করিয়ে হত্যার অভিযোগে নেত্রকোনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেছে নিহতের ভাই মোঃ লাল চাঁন মিয়া। মামলা নং- ৫৭৫, তারিখ-১৪/০৮/২০২৪ইং।
নিহত নার্গিস আক্তার ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার সিংরাউন্দ গ্রামের তারা মিয়ার কন্যা। ঘটনাটি ঘটেছে পার্শবর্তী পূর্বধলা উপজেলার বিলকাউশি গ্রামে।
মামলার আসামীরা হলেন- বিলকাউশি গ্রামের মৃত আঃ রশিদের ছেলে মনোয়ার হোসেন মিশু (২৪), জাহাঙ্গীর হোসেন (২৬), আলমগীর হোসেন (২৬), মৃত আঃ রশিদের স্ত্রী মোছাঃ হাছেন বানু (৫৫) ও গৌরীপুর উপজেলার সিংরাউন্দ গ্রামের সাদরুল আমিনের ছেলে আলামিন (২০)। মামলাটি তদন্ত করছেন পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নেত্রকোনা।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছর পূর্বে নার্গিস আক্তারের বিয়ে হয় নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলার বিলকাউশি গ্রামের আঃ রশিদের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৬) এর সঙ্গে। বিয়ের এক বছরের মাথায় নিহতের স্বামী কাজের জন্য ওমান চলে যায়। এরপর থেকেই প্রবাসী স্বামীর প্ররোচনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন ৫লক্ষ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে। সেই চাপের পরেও দরিদ্র পরিবারের কন্যা নার্গিস টাকা এনে দিতে না পারায় মামলার আসামীগণ শারীরিকভাবে মারধর ও মানসিক নির্যাতন করে জোরপূর্বক বিষপান করায়। পরে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে একটু সুস্থ হলে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এর পরের দিন আবার সে অসুস্থ হয়ে পড়লে আসামীগণ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ৪ আগষ্ট তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহতের ভাই মোঃ লাল চাঁন মিয়া বলেন, আমার বোন মারা যাওয়ার পরপরই তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন হাসপাতালে রেখেই পালিয়ে যায়। হত্যাকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করছে এবং আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মামলা প্রত্যাহার করার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শন ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করছে। আমি আমার বোনের হত্যাকারীদের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
মামলার বিবাদী মনোয়ার হোসেন মিশু বলেন, আমার ভাবীর তার প্রবাসী স্বামীর সাথে মোবাইল ফোনে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার পরপরই সে নিজেই বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই নেত্রকোনার এসআই মোঃ নুর উদ্দিন জানান, মামলার কাগজ পেয়েছি, তদন্ত কাজ চলমান আছে।