মোঃ মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিশু শিক্ষার্থী (১০) কে ধর্ষণের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইয়ের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেছে ভুক্তভোগী এক সনাতন ধর্মাবলম্বী পরিবার। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন তিন নং ট্রাইব্যুনালে এই মামলা দায়ের করা হয়।
মামলায় কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা পূর্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ জাকির হোসেনের ছোট ভাই শেখ আক্তার হোসেন ওরফে সোয়েব আক্তারকে প্রধান ও আরো দুজন সহযোগীসহ তিন জনকে আসামী করা হয়েছে। আসামী আক্তার হোসেন বাঙ্গরা গ্রামের মৃত শেখ রমিজ উদ্দিনের ছেলে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ভিকটিমের বাবার দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে বিজ্ঞ আদালত কুমিল্লা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)কে তদন্ত করার জন্য আদেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ভিকটিম মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা সদর এলাকার বাঙ্গরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। সে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার পথে আসামী আক্তার প্রায় সময়ই তাকে উত্ত্যক্ত করতো এবং কু প্রস্তাব দিতো। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে এগারোটায় ভিকটিম (১০) বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে পুজো দেয়ার জন্য তুলশী পাতা আনতে পাশের বাড়িতে যায়। এসময় পাশের বাড়ীর গৌর মনি বিশ্বাস ভিকটিমকে ডেকে তার ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে পূর্ব থেকে অবস্থান করছিলো আসামী শেখ আক্তার এবং তার সহযোগী শামু চন্দ্র নট্ট। গৌর মনি বিশ্বাস ভিকটিমকে নিয়ে শেখ আক্তারের হাতে তুলে দেন। এসময় শামু চন্দ্রকে পাহাড়ায় রেখে আক্তার হোসেন স্কুল ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে বিবস্ত্র করে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর কান্নাকাটি করতে করতে বাসায় গিয়ে ঘটনাটি তার বাবা মাকে জানালে তারা মেয়েকে চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে কুমেকের ভিকটিম সার্পোট সেন্টারের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় তার বাবা থানায় অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করে কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী চন্দন দেবনাথ বলেন, আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি চরম আতংকে দিন পাড় করছি। তাদের অনেক ক্ষমতা। আমি নীরিহ হিন্দু মানুষ, আমি আমার মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের ন্যায় বিচার চাই।
স্থানীয় একাধিক সুত্র জানায়, ইউপি চেয়ারম্যান শেখ জাকিরের ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে তার ছোট ভাই শেখ আক্তারসহ সকল ভাইয়েরা এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। ড্রেজার ব্যবসা থেকে শুরু করে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার করতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া, ভূমি, দোকান-পাট দখলসহ এলাকাকে জিম্মি করে রেখেছেন।
মামলার আইনজীবী এ্যাডভোকেট আতিকুল ইসলাম বলেন, বিজ্ঞ আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তভার দিয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে আসামী শেখ আক্তার হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করেও ফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।