মো. আবুল হাসেম, মাটিরাঙ্গা (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: সকল বিভেদ ভুলে নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রাখার উপর জোর দিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেছেন, কারো উস্কানিতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করা যাবেনা। নিজেদের মধ্যে ভাতৃত্ববোধ জাগ্রত করতে হবে। বিশেষ কোন গোষ্ঠীকে পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরীর সুযোগ দেয়া যাবেনা।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙায় সম্প্রীতি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাটিরাঙার সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে আয়োজিত সম্প্রীতি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মাটিরাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মিজানুর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কর্মী শাহেনা আক্তার।
সম্প্রীতি সমাবেশে খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল, সাবেক মেয়র আবু ইউসুফ চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নাছির আহম্মেদ চৌধুরী, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মনিন্দ্র কিশোর ত্রিপুরা, ব্যাবসায়ী নেতা জিয়াউর রহমান, মাটিরাঙ্গা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব হাফেজ মাও. হারুনুর রশীদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
স্যোশাল মিডিয়ার গুজবে গা ভাসিয়ে না দেয়ার আহবান জানিয়ে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, পাহাড়ের অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করা যাবেনা।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল শান্তি স্থাপনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতার আহবান জানিয়ে বলেন, যেকোন অপরাধ দমনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সচেষ্ঠ আছে। সাম্প্রতিক হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে তিনি সকলকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকারও আহবান জানান।
সম্প্রীতি সমাবেশে বক্তারা সাম্প্রতিক ঘটনাকে পাহাড়ের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য হুমকি উল্লেখ করে বলেন, একটি বিশেষ মহল শান্ত পাহাড়কে অশান্ত করতে ষড়যন্ত্র করছে। তাদেরকে সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করার আহবান জানান বক্তারা।
গেল বুধবার খাগড়াছড়ির নিউজিল্যান্ড এলাকায় মামুন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করে দীঘিনালা ডিগ্রী কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি লারমা স্কয়ারের দিকে যাওয়ার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে লারমা স্কয়ারে দোকানপাট ও বসত বাড়িতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে পুড়ে যায় শতাধিক দোকানপাট ও বসতবাড়ি। এ ঘটনায় আরো তিন পাহাড়ী যুবক নিহত হয়।