কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের রামু উপজেলার ব্যবসায়ী নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ হত্যাকান্ডের একমাস পার হলেও কোনো আসামি ধরা পড়েনি। তবে আসামিদের ধরতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদিকে এখনও কোনো আসামি ধরা না পড়ায় এই হত্যা মামলার অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহত নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদের পরিবার।
মামলা সূত্রে জানা যায়, রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের ফুলনীর চর এলাকার মরহুম নুরুল আমিনের বড় ছেলে ব্যবসায়ী নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ-কে স্থানীয় একদল সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। গত ৩১ আগষ্ট বিকালে ফুলনীর চরস্থ তার বাগান বাড়ীতে দুর্র্ধষ সন্ত্রাসী মোতাহেরের নেতৃত্বে লম্বা দা, দু'ধারা ধারালো চাকু, কিরিচ দিয়ে আশিক নেওয়াজ, মোর্শেদ আলম তুষার, মিজানুর রহমান মিজান, আরফাত, রায়াত, জামশেদ আলম শিশির, মোমেন, আরিফুল ইসলাম পুতু, সাইদুল আলম রুমেল ওরফে রুবেল, জাহিদ হাসান জাহেদ, সাইদুল ইসলাম রিপন, মনজুর আলম, গোলাম কাদেরসহ আরও অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন ভাড়াটিয়া কিলারদের সহযোগিতায় নৃশংসভাবে নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ-কে হত্যা করে।
এসময় তার ছোটভাই কামরুল হাসানকেও গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। এ ঘটনায় ৩ সেপ্টেম্বর ১৪ জন আসামির নাম উল্লেখ করে রামু থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন রাশেদের ছোটভাই সাইফুর রহমান সুজন।
তিনি বড়ভাইকে হারিয়ে অনেকটাই বাকরুদ্ধ হয়ে বলেন, আমার ভাইকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে খুনিরা। আমার আরেক ভাই গুরুতর জখম করেছে খুনিরা। মামলার একমাসেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। বড়ভাইকে তো আর ফিরে পাবো না, কিন্তু আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হোক। এতে কোনো অপরাধী অপরাধ করে আর পার পাবে না। তিনি আরও বলেন, খুনিদের বিরুদ্ধে রামু থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। তারা প্রতিনিয়ত সশস্ত্র অবস্থায় আমাকে ও মামলার সাক্ষীদের নানান ভয়ভীতি প্রদানসহ প্রাণনাশের হুমকি ধমকি দিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে রামু থানার ওসি ইমন কান্তি চৌধুরী বলেন, আসামিরা বার বার স্থান পরিবর্তন করায় গ্রেফতারে বিলম্ব হচ্ছে। তবে, তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশসহ যৌথ বাহিনী অভিযান অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে, রামুতে ব্যবসায়ী নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গেল ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে রামু চৌমুহনী স্টেশন চত্বরের অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে শতশত নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করে। এসময় বক্তারা বলেন, ব্যবসায়ী নুরুল আলম ছিদ্দিকী রাশেদ একজন সমাজকর্মী ও দানশীল ব্যক্তি ছিলেন। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে তাকে প্রকাশ্যে দিনে দুপুরে কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়, যা সভ্য সমাজে মেনে নেওয়া যায় না।
এ ঘটনার পর পুলিশের রহস্যজনক নীরবতায় ঘাতকরা প্রশ্রয় পেয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে হবে, অন্যথায় থানা ঘেরাওসহ আরও বড় আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হলেও আসামি গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।