রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলে অস্বস্তিকর গরমের পর টানা দুদিন বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি ও উজান থেকে আসা ঢলের কারণে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলসহ কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ব্যারাজ পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ৫১.৮৩ সেন্টিমিটার, যা সকাল ৬টায় ছিল ৫১.৭৬ সেন্টিমিটার। বিপৎসীমা ৫২.১৫ সেন্টিমিটার।
বৃহস্পতিবার থেকে রংপুর অঞ্চলে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি করছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এসব নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ও সংলগ্ন উজানে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি আগামী দুই দিন দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার নদীর পানি সতর্ক-সীমায় প্রবাহিত হতে পারে, যার ফলে নদী তীরবর্তী চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অন্যদিকে, ব্রহ্মপুত্র নদ ও যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল আছে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি স্থিতিশীল থাকতে পারে, তবে পরবর্তী চার দিনে তা বৃদ্ধি পেতে পারে।
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলের কারণে রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার সব নদী এবং বিলের পানির স্তর বাড়ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, বসতবাড়ি ও রাস্তা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে, এবং আগাম শীতকালীন শাকসবজি ও বিভিন্ন ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ডালিয়াস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ রাশেদীন বলেন, অব্যাহত বৃষ্টির কারণে তিস্তার পানি বাড়ছে, তাই পানি চাপ সামলাতে ৪৪টি জলকপাট খোলা রাখা হয়েছে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরে ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে এবং আরো বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।