গাজী জয়নাল আবেদীন, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: একুশে পদক প্রাপ্ত দেশখ্যাত ছড়াকার, রাউজানের সূর্যসন্তান সুকুমার বড়ুয়াকে জ্ঞানচর্চা, শিক্ষার ক্ষেত্রে তাঁর গৌরবময় অবদান ও কীর্তির স্বীকৃতি স্বরূপ ‘সাহিত্যবিনোদ' উপাধিতে ভূষিত করলেন বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটি।
গতকাল বেলা ২ টায় চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার ঐতিহাসিক মহামুনি মন্দির মহাবিহারে বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, ভিক্ষুসংঘের মাতা-পিতাকে সম্মাননা, অনলাইন ভিত্তিক বৌদ্ধ ধর্মীয় প্রতিযোগীতার বিজয়ীদের মাঝে স্বর্ণপদক ও সনদ বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁকে এই উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ছড়াকার সুকুমার বড়ুয়া ছাড়াও সমাজ, সদ্ধর্ম, দেশ, জাতি ও মানবতা বিনির্মাণে অসামান্য অবদান রাখায় আরো পাঁচজনকে বিশেষ উপাধিতে সম্মানিত করা হয়। এরা হলেন ভদন্ত আয়ুপাল মহাথের, বিদর্শন সাধক সচ্ছিতানন্দ মহাথের, ভদন্ত ধর্মানন্দ মহাথের, ভদন্ত জ্ঞানবংশ মহাথের ও সত্যপদ বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে আশীর্বাদক ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার ২৯তম সংঘনায়ক অধ্যাপক বনশ্রী মহাথের ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার উপসংঘনায়ক সদ্ধর্মরশ্মি রতনশ্রী মহাথের। প্রধান জ্ঞাতি ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি শাসনতিলক সদ্ধর্মজ্যোতি সুনন্দ মহাথের।
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটির সভাপতি সংঘসুহৃদ ধর্মপ্রিয় মহাথেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের উদ্বোধক ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি ধর্মসেনাপতি রাজগুরু অভয়ানন্দ মহাথের। প্রধান অতিথি ছিলেন পটিয়া ডায়াবেটিক হাসপাতালের সিএমও ডা. দিবাকর বড়ুয়া।
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটির সচিব সংঘনিধি সুমঙ্গল থেরের সার্বিক পরিচালনায় এবং ভদন্ত মেত্তানন্দ থের ও ভদন্ত শাসনমিত্র ভিক্ষুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের রাউজান উপজেলা শাখা সভাপতি মৈত্রীবারিধি পরমানন্দ মহাথের, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভা সহ সাধারণ সম্পাদক ভদন্ত বোধিপ্রিয় মহাথের, মহামুনি মন্দির মহাবিহারের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক উজ্জ্বল মুৎসুদ্দী, শিক্ষক দোলন বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক, মাদল কান্তি বড়ুয়া। অনুষ্ঠানের শেষে ২৫১জন বিজয়ীদের মাঝে স্বর্ণপদক ও সনদ তুলে দেন অতিথিরা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটির আয়োজনে কোমলমতি শিশু-কিশোরদের মধ্যে ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ জাগিয়ে তুলতে অনলাইনের মাধ্যমে বৌদ্ধ ধর্মীয় দর্শন, গান, বন্দনা, সূত্রপাঠ, বৌদ্ধ কীর্ত্তণসহ নানা বিষয়ে প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগীতায় সারাদেশ হতে কয়েক হাজার প্রতিযোগী অংশ নেন। প্রতিযোগীতায় বিচারক প্যানেল যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ২৫১ জনকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। বিচারক প্যানেল ছিলেন সদ্ধর্মভান্ডারিক ড. প্রিয়দর্শী মহাথের, প্রফেসর দীপানন্দ থের, ভদন্ত আনন্দ থের,
পিএইচডি গবেষক ভদন্ত অমিতানন্দ থের, বাংলাদেশ টিভি বেতার শিল্পী শরণ বড়ুয়া, ও চ্যানেল আই এর সেরা কণ্ঠশিল্পী চৈতি মুৎসুদ্দি।
বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট মঙ্ক সোসাইটির ৯ম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে অনেক জ্ঞানীগুণী, গবেষক, সংগঠক, সমাজকর্মী, শিক্ষানুরাগী, দায়ক-দায়িকার মহাসমাগম ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রজ্ঞাদীপ নামের একটি স্মারণিকার মোড়ক উন্মোচন করা হয়।