এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণের অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ৮৭ নেতাকর্মীর নামে মামলা হয়েছে। এ ছাড়াও মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
এর মধ্যে একজন পৌরসভার মেয়র, একজন ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক এমপির পিএ মাদ্রাসা শিক্ষক ও একজন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষকও রয়েছেন।
গতকাল বুধবার (২ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার খানখানাপুর ব্র্যাকপাড়ার মো. ইদ্রিস ফকিরের ছেলে মো. শাহিন ফকির বাদী হয়ে সদর থানায় ওই মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩ ও ৬ ধারাসহ দণ্ডবিধির ১৪৩, ৩৪১, ৩০৭, ৩২৩, ৩২৫, ১১৪ ও ৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘বুধবার মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’
মামলার আসামিরা হলেন- রাজবাড়ী সদর উপজেলার শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা নুর মোহাম্মদ ভূঁইয়া, শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ফজলুল হক, পাংশা পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি দীপক কুণ্ডু, গোয়ালন্দ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম মণ্ডল, রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক এমপি কাজী কেরামত আলীর বিশেষ সহকারী এনায়েতুল হাসনাইন রওশন, শ্রমিকলীগ নেতা আব্দুর রশিদ, শাহনেওয়াজ স্বপন, আজিম মোল্যা, দেবাশীষ ভৌমিক, বাদল দে, জীবন, শিপন, হাজী আব্দুস সাত্তার, জুলহাস মল্লিক।
এরা প্রত্যেকেই এলাকায় মাদক কারবারি, মাদক মামলার আাসামী ও হত্যা মামলার আাসমী ও মদতদাতা।
এ মামলায় আরও আসামি করা হয়েছে- রাসেল শেখ, কালাম খান, আমজাদ মণ্ডল, ইউসুফ ভূঁইয়া, ইব্রাহিম ভূঁইয়া, তাজেল ভূঁইয়া, রফিক শেখ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ রাজীব, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মিয়া সোহেল, আক্কাস খাঁ, রাসেল মোল্যা, কাজী নুর নবী বাবু, লিটন মেম্বার, ইসাক খাঁ, ফরহাদ মোল্যা, খানখানাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির আলী মোল্যা, হানিফ, কামাল পাটোয়ারী, রবিউল পাটোয়ারী, বিল্লাল পাটোয়ারী, সজিব পাটোয়ারী, আলম পাটোয়ারী, ফিরোজ আহম্মেদ জুয়েল, জনি বিশ্বাস, ওমর আলী বিশ্বাস, আলম খান, সালাম শেখ, শহীদওহাবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ফরিদ আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, দীপক, মুক্তার মণ্ডল, রনি, সালাম বেপারী, অহিদ পাটোয়ারী, রমজান, আক্কাস মোল্যা, বাবলু, উজ্জল শেখ, হেলাল শেখ, ফরহাদ।
এছাড়া রয়েছেন- বসন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া, ফারুক শেখ, সানি, বসন্তপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য মির্জা ফরিদুজ্জামান হাবিবুল, বসন্তপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা সেন্টু, রাজবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি মানিক বিশ্বাস, তোরাপ আলী মণ্ডল, মনিরুজ্জামান ওরফে অশ্রু মেম্বার, শাহনেওয়াজ শানু, সাখাওয়াত হোসেন সাখা, রনি মোল্যা, কামাল, তৌহিদ, সেলিম মোল্যা, শাফিন ফকির, সজিব ফকির, সানাউল্লাহ বিশ্বাস, সুমন কাজী, হারুন হাওলাদার, কামরুল হোসেন, মিঠু মিজি, মোস্তফা শেখ, জাহিদ মল্লিক, ইসহাক শেখ, জাফর মণ্ডল, রনি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহিন শেখ, জয় মিজি, স্বাধীন, কামাল ফকির, উসমান মোল্যা, মনোয়ার বারি, সাইদুর রহমান মোস্তাকসহ অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জন।
মামলার এজাহারে বাদী মো. শাহিন ফকির বলেন, ‘উল্লিখিত আসামিরা গত ৫ আগস্ট রাজবাড়ী সদর উপজেলার গোয়ালন্দ মোড়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। এতে তার ভাই রেজাউল করিম ও মা রাহেলা বেগমসহ রাজা, ইসলাম, কালাম ঢালী, শহিদ, সফিউদ্দিন আহমেদ কাসেম, মুরাদ, জুয়েল, আমজাদ হোসেন বাবু, জাহিদ মেম্বার, সোবাহানসহ অসংখ্য আন্দোলনকারী আহত হন।’