মুন্সীগঞ্জে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর তৃতীয় জানাজা নামাজ সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (৬ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে শ্রীনগর উপজেলা স্টেডিয়ামে হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে জানাজার নামাজ পড়ানো হয়।
এতে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের স্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা অংশ নেন।
সাবেক রাষ্ট্রপতির মরদেহ তার গ্রামের বাড়ি মজিদপুর দয়হাটায় নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে বাদ যোহর চতুর্থ জানাজা নামাজ শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে রাজধানীর উত্তরা মহিলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন মহাসচিব ছিলেন। ১৯৭৮ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অনুরোধে বদরুদ্দোজা চৌধুরী রাজনীতিতে যোগ দেন। ১৯৭৯ সালে বদরুদ্দোজা চৌধুরী তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় উপপ্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়া সরকারের সময়েই মন্ত্রী ছিলেন। পররাষ্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপালন করেন। বিটিভিতে তার ‘আপনার ডাক্তার’ অনুষ্ঠান খুবই জনপ্রিয় ছিল।
মুন্সীগঞ্জ-১ আসন থেকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দুবার সংসদের উপনেতা এবং একবার বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের ১৫তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব নেন বদরুদ্দোজা চৌধুরী।
রাজনৈতিক কারণে ২০০২ সালের ২১ জুন তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। পরে ২০০৪ সালের ৮ মে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ‘বিকল্পধারা বাংলাদেশ’ নামে একটি রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি দলটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। তার ছেলে মাহী বি চৌধুরী ছিলেন দলের মুখপাত্র ও প্রেসিডিয়াম সদস্য।
বদরুদ্দোজা চৌধুরী ১৯৩০ সালের ১১ অক্টোবর কুমিল্লা শহরের ‘মুন্সেফ বাড়ি’ নামের নানাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা আইনজীবী কফিল উদ্দিন চৌধুরী কৃষক প্রজা পার্টির সহসভাপতি, যুক্তফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম হাসিনা ওয়ার্দা চৌধুরী। তিনি দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক। বড় মেয়ে মুনা চৌধুরী আইনজীবী এবং ছোট মেয়ে শায়লা চৌধুরী চিকিৎসক।