মোঃ মেহেদী হাসান, পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি: গত ৫ আগস্টের আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর থেকে রাজশাহীর পুঠিয়া পৌরসভায় ভেঙ্গে পড়েছে নাগরিক সেবা।
সকল পৌরসভার মেয়র অপসরণের পরেই দ্বিতীয় ধাপেই সকল কাউন্সিলরগণকে অপসারণ করা হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় নাগরিকদের ভোগান্তির জায়গা পৌরসভা।
সেবা নিতে আসা নাগরিকগণ সঠিক সেবা না পাওয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, পৌরসভা তো শুধু নামমাত্র হয়ে আছে। আমরা কোন দিনই সঠিক সময়ে সেবা পায়নি জনপ্রতিনিধি থাকার পরে যেটুকু সেবা পেতাম। বর্তমানে প্রশাসক নিয়োগের পরে একটি কাজের জন্য পৌরসভায় আসলে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। অপেক্ষার সময় কয়েক দিনে রূপান্তরিত হয়।
পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, নাগরিকত্ব সনদ আর প্রত্যায়ন পত্রের জন্যে আগে যেখানে এক দিনেই হয়ে যেত এখন প্রায় দুই থেকে তিন দিনেরও অধিক সময় লাগে আর বিশেষ করে এখন কোন প্রকার জনপ্রতিনিধি না থাকায় এই ভোগান্তিতে পড়েছে নাগরিকগণ। তবে এগুলো ছাড়া সব ধরনের সেবায় এখন পর্যন্ত সচল রয়েছে। পুঠিয়া পৌরসভার আয়তন ১৩.৫১ বর্গকিমি (৫.২২ বর্গমাইল)। এই আয়তনকে নয়টি ওয়ার্ডে বিভক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে পৌরসভায় মোট জনসংখ্যার রয়েছে ২৫ হাজারের বেশি। এদের সেবা দেওয়ার জন্য একজন মেয়র ও নয়জন কাউন্সিলর এবং তিনজন মহিলা সংরক্ষিত কাউন্সিলর রয়েছিল। বর্তমানে জনপ্রতিনিধিদের বিলুপ্ত করার পরে উপজেলার ও পৌরসভার বিভিন্ন কর্মকর্তাদের মধ্যে ৯ টি ওয়ার্ডে ৬ জন প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন পৌরসভা।
সেবা নিতে আসা একাধিক ব্যক্তি জানান, আমি এসেছিলাম আমার নাগরিকত্ব সনদের জন্য এসে দেখি আগে যেখানে এক দিনেই নাগরিকত্ব সনদ হাতে পেয়ে যেতাম আর এখন দেখি দুই থেকে তিন দিন সময় লাগছে। এতে করে আমাদের একটা নাগরিকত্ব সনদের জন্য দুইবার আসা লাগছে পৌরসভায়।
সেবা নিতে আসা আরেকজন ব্যক্তি জানান, আমি এসেছিলাম প্রত্যয়ন পত্র নেবার জন্য কিন্তু এসে দেখি প্রথমে আবেদন করতে হয় তারপরে সে কাগজটি আরো কোন কোন দপ্তরে যাবে এরপরে আমার হাতে আসবে কিন্তু আমার হাতে আসতে সময় লাগবে দুই থেকে তিন দিন বলে জানান। কিন্তু আগে আমরা এই কাগজটি হাতে পেতাম মাত্র আধা ঘন্টা থেকে এক ঘন্টার মধ্যে। এ ধরনের ভোগান্তিমূলক সেবা আমরা পৌরসভা থেকে আশা করিনি। এজন্য এ সকল জরুরী সেবা গুলো যেন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে দেওয়া হয় আমরা এর জোর দাবি জানাই।
পৌরসভার দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ বসাক বলেন, ভোগান্তি একটু হচ্ছে এটা সত্য। ইতিপূর্বে কোন নাগরিক সেবা নিতে এলে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদেরকে সেবা দেওয়া হতো কারণ তারা যে ওয়ার্ড থেকে এসেছে সে ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি তাদের বিষয়ে সনাক্ত করতে পারতো দ্রুত। কিন্তু বর্তমানে প্রশাসক নিয়োগ হওয়ার পরে উপজেলার ও পৌরসভার কিছু কর্মকর্তাগণ জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব পালন করছে সে ক্ষেত্রে কোন নাগরিক সেবা নিতে এলে তাদের বিষয়ে সঠিক তথ্যের জন্য একটু সময় লাগছে। এজন্য একটু ভোগান্তিতে পড়ছে নাগরিকগণ। তবে অল্পদিনের মধ্যে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে জানান পৌরসভা এই কর্মকর্তা।