সামগ্রিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে ‘সড়ক নিরাপত্তা আইন’ প্রণয়ন করার আহ্বান জানিয়েছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে সোমবার (২১ অক্টোবর) এক সভায় বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে প্রতিষ্ঠানটি বলেন, পাঁচ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। প্রতি বছর বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১ হাজার ৫৭৮ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৬ সালে প্রতি লাখে রোডক্র্যাশে মৃত্যু ছিল ১৫.৩ এবং ২০২১ সালে এই মৃত্যু বেড়ে হয় প্রতি লাখে ১৮.৬ জনের মতো। অন্যদিকে, বিআরটিএ’র হিসাবমতে প্রতিবছর দেশে গড়ে প্রায় ৫ হাজার মানুষ মারা যায় ও ১০ হাজারের বেশি বিভিন্ন বিভিন্ন মাত্রায় আহত হয় এবং পঙ্গুত্ব বরণ করে।
রাজধানীর শ্যামলীস্থ ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের সভাকক্ষে দিবসটি উপলক্ষে আলোচনা সভায় দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার শুভ্র দেবের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ। এসময় তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের বিভিন্ন সংস্কারের কাজ হাতে নিয়েছেন। এই সংস্কার কাজের মধ্যে সড়কে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সড়ক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নীতিমাল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন অন্তর্ভূক্ত করা আহ্বান জানান তিনি।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন হাসপাতাল (নিটোর) এর ইউনিট চিফ প্রফেসর ডা. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার জামিউল আহ্ছান শিপু ও ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের রোড সেইফটি প্রকল্প সমন্বয়কারী শারমিন রহমান। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় “ছাত্র জনতার অঙ্গীকার, নিরাপদ সড়ক হোক সবার”।
সভায় বক্তারা আরো বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জাতিসংঘের গ্লোবাল প্ল্যানের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রোডক্র্যাশে মৃত্যু ও আহতের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশকে অবশ্যই প্রতিরোধযোগ্য রোডক্র্যাশ, মৃত্যু ও আহত হওয়ার সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে হবে। এর জন্য দরকার উপযুক্ত শক্তিশালী নীতি ও আইনি কাঠামো। বর্তমানে “সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮” ও “সড়ক পরিবহন বিধিমালা-২০২২” বলবৎ থাকলেও সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থার তেমন কোন উন্নয়ন হয়নি।
অন্যদিকে, সড়ক নিরাপত্তায় সরকারের পৃথক আইন প্রণয়নে একটি কমিটি গঠিত হলেও তা এখন স্থবির অবস্থায় আছে। সরকারের উচিত এখন এই কমিটিকে সক্রিয় করে সড়ক নিরাপত্তা আইন প্রণয়নে সচেষ্ট হওয়া এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আইন প্রণয়ন করা। তাহলেই এবছরের তরুণদের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়িত হবে। তাই সড়ক নিরাপত্তায় সংস্কার ভাবনা এখন সময়ের দাবী।