শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় তিন মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করছে জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড নামক তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকেই নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের বাইপাইল ত্রিমোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ শুরু করেন শ্রমিকরা। এর আগে সকাল ৮টার দিকে আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে একত্রিত হয়ে মিছিল নিয়ে বাইপাইলে আসে শ্রমিকরা।
ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি শিল্প পুলিশ ও জেলা পুলিশ রয়েছে।
তারা শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করলেও বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বেতন পরিশোধ না করা পর্যন্ত সড়ক থেকে সরবে না বলে জানিয়েছে।
এদিকে সকালবেলা সড়ক অবরোধের কারণে অফিসগামী ও স্কুলগামী লোকজনসহ সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছে। সড়কে গাড়ির প্রচণ্ড চাপ থাকায় এরই মধ্যে সড়কটির তিন পাশে দুই কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা অভিযোগ করেন, গত তিন মাস থেকে কোনো বেতন বোনাস দেওয়া হয়নি।
তার ওপর বেতন না দিয়ে কারখানাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। শ্রমিকদের প্রায় ৫২ কোটি টাকা বেতন বকেয়া রয়েছে জানিয়ে অবিলম্বে তা পরিশোধ করার দাবি জানান।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক শ্রমিক জানায়, বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন সময় কথা বললে তারা আমাদের নানা অজুহাতে ঘুরাতে থাকে। তিন মাস অতিবাহিত হলেও বেশির ভাগ শ্রমিক বেতন বোনাস পায়নি।
শ্রমিকরা আরো জানায়, গত তিন মাস ধরে পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। বাসা ভাড়া ও দোকান বাকি থাকায় অনেকটাই না খেয়ে দিন পার করছি। কোথাও চাকরি নিতে পারছি না। এক মাসের বেতন বোনাস পরিশোধ না করেই গত মাসের আগে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
গত মাসে বিজিএমইএ ও শ্রম মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু তিন মাসের বেতন এখনো পরিশোধ করেনি। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কে এসেছি। বেতন পরিশোধ করা না হলে অবরোধ চলবে।
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা কেউ দুই মাস কেউ আরো বেশি মাসের বেতন পায়নি। মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে। দ্রুতই শ্রমিকদের সমস্যা সমাধান করা হবে।
প্রসঙ্গগত, গতকাল সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা। কিন্তু প্রশাসন কিংবা মালিকপক্ষের কাছ থেকে কোনো আশ্বাস না পাওয়ায় দ্বিতীয় দিনের মতো অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে ভুক্তভোগী শ্রমিকরা।