শহিদ জয়, যশোর: যশোরের শার্শার মাদক ব্যবসায়ী বাদশা মল্লিক ও তার স্ত্রী রোকসানা বেগমের নামে ৫ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫১২ টাকার তথ্য গোপন করা এবং জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ২ কোটি ৪১ লাখ ৭ হাজার ৬৫৪ টাকা অর্জন করার অপরাধে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত কার্যালয়ে(দুদক) চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। আজ বুধবার দুদকের সাবেক সহকারী পরিচালক ও বর্তমানে বাগেরহাট জেলার উপপরিচালক মোহা.মোশাররফ হোসেন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে এই চার্জশিট জমা দেন।
মোট ৭ কোটি ৮৭ লাখ ৪১ হাজার ১৫৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনকারী মো. বাদশা মল্লিক বেনাপোল পোর্ট থানার রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত কেরামত আলীর ছেলে। এবং অপর আসামি মিসেস রোকসানা বেগম বাদশার স্ত্রী। এদের মধ্যে বাদশা জামিনে মুক্ত আছেন, রোকসনাকে গ্রেফতার করা হয়নি। তাদের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর মামলা হয়েছিল দুদকে। ২৩ অক্টোবরে সে মামলায় চার্জশিট দাখিল হলো। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৬(২), ২৭(১) ধারাসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারাসহহ দ-বিধির ১০৯ ধারায় এই চার্জশিট দেয়া হয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, বেনাপোল স্থলবন্দর এলাকার মো. বাদশা মল্লিক একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এ ছাড়া তার আর কোনো পেশা নেই। দেশে ও ভারতে তার ৪জন স্ত্রী। মামলার আসামি রোকসানা বেগম ছাড়া অন্য ৩ স্ত্রীর ঘরে বাদশার ছেলে ও ৪ মেয়ে রয়েছে। মাদক ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে যেখানে ব্যবসার সুবিধা সেখানে তিনি বিয়ে করেছেন।
বাদশা দুদকে ২০১৯ সালের আগস্টে দুদকের নোটিস মোতাবেক ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার টকার স্থাবর ও ৩ লাখ ৭০ হাজার ৩২৮ টাকার অস্থাবর হিসেবে মোট ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮ টাকার সম্পদের হিসেব জমা দেন। তার সে সময় একটি ৫তলা ভবন ও ২০ভরি সোনার হিসেবও দাখিল করেন।
অবশ্য তিনি ২০১৮-১৯ করবর্ষে ব্যসায়িক পূঁজি ১১ লাখ ৫ হাজার ৬ শত টাকা দেখিয়েছেন। বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে তার ও নির্ভরশীল(স্ত্রী, পুত্র, কন্যা) ৫৭ লাখ ৭৪ হাজার টাকার স্থাবর, ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকার অস্থাবর মোট ৬১ লাখ ৪৪ হাজার ৩২৮ টাকাসম্পদের ঘোষণা দিলেও দুদকের তদন্তে ৫ কোটি ৯২ লাখ ৬১ হাজার ৯২১ টাকার স্থাবর ও ১৫ লাখ ১৫ হাজার ৯২৮ টাকার অস্থথাবর মোট ৬ কোটি ৭ লাখ ৭৭ হাজার ৮৪৯ টাকার সন্ধান পাওয়া যায়। পারিবারিক ব্যয়সহ অন্যান্য হিসেব মিটিয়েও ৫ কোটি ৪৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫১২ টাকার তথ্য গোপন করা এবং জ্ঞাত আয় বর্হিভূত ২ কোটি ৪১ লাখ ৭ হাজার ৬৫৪ টাকা অর্জন করার হিসেব দেননি। দুদকের তদন্তে এটা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এবংএই টাকা ও সম্পদ তিনি ও তার স্ত্রী রোকাসানার আওতায় থাকায় তাদের নামে মামলায় চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।