জাবেদ হোসাইন মামুন, সোনাগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি: সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির একাংশ ও উপজেলা ছাত্রদলের একাংশকে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে উপজেলা যুবদলের আহবায়ক খুরশিদ আলম ভূঞা বলেছেন সোনাগাজীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগকে আশ্রয় দিয়ে নিজ দলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলে বাড়ি থেকে ধরে এনে ল্যাংটা করে পেটানো হবে।
তিনি আরো বলেন, নিজেদের দল ভারী করার জন্য সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির একাংশ ও ছাত্রদলের একাংশ নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। তাদেরকে দিয়ে বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের পেটাচ্ছেন। তারেক রহমানকে হত্যার চেষ্টাকারী ওয়ান ইলেভেনের খলনায়ক মাসুদ চৌধুরীরকে একসময় প্রকাশ্য সহযোগিতা করেছেন। সব তথ্য আমাদের জানা আছে। বিএনপি নামধারী কিছু ব্যক্তি নিজেদের সন্তানদেরকে ছাত্রলীগে ঠেলে দিয়ে অতীতে সোনাগাজীতে নানা অপকর্ম চালিয়েছেন। সময়ের ব্যবধানে সেসব ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা বোল পাল্টিয়ে এখন বিএনপি নেতাকর্মীদের সন্তান আখ্যা দিয়ে আশ্রয-প্রশ্রয় দিচ্ছেন। অতিতেও তারা বিএনপির লোকজনের ওপর নির্যাতন করেছেন এখনও নির্যাতন অব্যাহত রেখেছেন। ছাত্রলীগের অপকর্মের কারণে সংগঠনটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। দেখা যাবে তাদের সহযোগিতার কারণে অপকর্মের কলঙ্ক নিয়ে ছাত্রদল ও যুবদলকেও এর কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। যাদের হাতের রক্ত শুকায়নি তারা আবার বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতর্কর্মীদের রক্ত ঝরাচ্ছেন। বিগত ১৭ বছর আ.লীগ ও পুলিশ আমাদের ত্যাগী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার কামান বন্দুক ব্যবহার করে আমাদেরকে দমাতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। আমি সব সময় ত্যাগীদের পাশে আছি এবং থাকব। আর যদি আমার কোন ভাইয়ের ওপর আঁচড় পড়ে তাহলে বাড়ি থেকে ধরে ল্যাংটা করে জিরোপয়েন্টে এনে পেটানো হবে এবং বাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হবে।
সোনাগাজী সরকারি কলেজ ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিরাজ ও রায়হানের ওপর ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার দুপুরে সোনাগাজী সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের উদ্যোগে সোনাগাজী জিরোপয়েন্টে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে তিনি এসব বলেছেন।
সোনাগাজী সরকারি ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম জিহাদের সভাপতিত্বে ও উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় উক্ত প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফেনী জেলা কৃষকদলের সাধারণ সমম্পাদক সামছুউদ্দিন খোকন।
আরও বক্তব্য রাখেন জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সৈয়দ আলম ভূঞা, উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক মিস্টার নাসির উদ্দিন, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নিজাম উদ্দিন ও পৌর যুবদলের আহবায়ক মো. ইকবাল হোসেন।
উল্লেখ্য, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগ ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের অনুসারী হিসেবে পরিচিত এবং তাদের আশ্রয়ে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী জিসান, শুভ, ফাহিম, নিলয় ও হাসিবের নেতৃত্বে কলেজ ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান মিরাজ ও রায়হানের ওপর হত্যার উদ্দেশ্যে ২৮ অক্টোবর দুপুরে সোনাগাজী সরকারি ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে হামলা করেছেন বলে তারা দাবি করেন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফেনীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনার জন্য ছাত্রদল ও যুবদলের নেতারা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টুর অনুসারী হিসেবে পরিচিত ছাত্রদল নেতা নুর আলম সোহাগ, মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসকে দায়ী করেন। তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকা ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রদলের দু'নেতার ওপর হামলা করেছেন এমনটাই দাবি করেন। উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব নুর আলম সোহাগ ঘটনার সঙ্গে তার অনুসারীরা জড়িত নয় বলে দাবি করে বলেন, হামলায় আহতরা ছাত্রদলের নেতা। হামলাকারীদেরকে আমি চিনি না। ছাত্রলীগের সাবেক নেতাদের সঙ্গে কয়েকজনের ছবি ফেসবুকে দেখেছি।