ঢাকা
২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ১২:৩৬
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ৩১, ২০২৪

গ্রামের আঁকাবাঁকা মেঠো পথে ধীরে ধীরে বয়ে চলা গরুর গাড়ি আটঘরিয়ায় এখন চোখে পড়ে না

আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি: একসময় আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাহন হিসেবে গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল। গরুর গাড়িই ছিল যোগাযোগের একমাত্র বাহন। পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার দেবোত্তর, কয়রাবাড়ী, একদন্ত, লক্ষীপুর, চাঁদভা, মাজপাড়া, আটঘরিয়া সহ বিভিন্ন এলাকায় কালের পরিক্রমা আধুনিকতার স্পর্শে ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি এখন শুধুই অতীতের স্মৃতি। তাই এক সময় গরুর ও মহিষ গাড়ির চালককে বলা হয় গাড়িয়াল।

গ্রামগঞ্জে আঁকাবাঁকা মেঠো পথে ধীরে ধীরে বয়ে চলা গরুর গাড়ি এখন আর চোখে পড়ে না। পল্লি এলাকার জনপ্রিয় বাহন ছিল গরু-মহিষের গাড়ি। বিশেষ করে গ্রাম অঞ্চলের কৃষি ফসল বহন ও মানুষ বহনের প্রিয় বাহন ছিল দু-চাকার এই গরু-মহিষের গাড়ি। যুগের পরিবর্তনে এ বাহন এখন হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামবাংলার জনপ্রিয় গরু-মহিষের গাড়ি এখন অধিকাংশ এলাকা থেকে বিলুপ্তির পথে। দুই যুগ আগেও গরুর গাড়িতে চড়ে বর-বধূ যেত। গরুর গাড়ি ছাড়া বিয়ে কল্পনাও করা যেত না। বিয়ে বাড়ি বা মালামাল পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র পরিবহন।

আটঘরিয়া পৌরসভার শ্রীকান্ত পুর গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তি কোরবান, রাধাকান্তপুর গ্রামের আব্দুল কোবাদ প্রাং বলেন, ‘আগে আমাদের নিজেদেরও গরু ও মহিষের গাড়ি ছিল। সেই গাড়িতে করে কৃষি পণ্য ও হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন মালামাল আনা-নেয়া করা হতো। এখন গরুর গাড়ি তেমন একটা চোখে পড়ে না।’

রাধাকান্তপুর গ্রামের এমএ মাজেদ বলেন, আমাদের এলাকায় দুটো থেকে তিনটি গরু ও মহিষের গাড়ি ছিল, বাবার সাথে ভোর বেলা প্রতি বুধবার ও রবিবার টেবুনিয়া হাটে যেতাম মালা মাল নিয়ে। কখনও বাড়িতে মাল নিয়ে ফিরতাম সন্ধ্যার আগে অথবা পরে।

বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিক যুগ। এখনকার মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার, লরি, পিকআপসহ বিভিন্ন মালবাহী গাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামাঞ্চলেও আর চোখে পড়ে না গরুর-মহিষের গাড়ি। অথচ গরুর-মহিষের গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি লাগে না। ফলে ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও করে না। এটি পরিবেশবান্ধব একটি যানবাহন। আবার ধীর গতির কারণে এতে তেমন কোনো দুর্ঘটনারও আশংকা থাকে না।

আমাদের পল্লী এলাকার জনপ্রিয় বাহন ছিল গরু আর মহিষের গাড়ি। বিশেষ করে জনপদে কৃষি ফসল বহন ও মানুষ বহনের প্রিয় বাহন ছিল দু-চাকার এই গরু আর মহিষের গাড়ি। মাঝেমধ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় দু-একটি গরু ও মহিষের গাড়ি চোখে পড়লেও শহরাঞ্চলে একেবারেই দেখা যায় না। আধুনিক সভ্যতায় ঐতিহ্যবাহী গরু ও মহিষের গাড়ি হারিয়ে যেতে বসেছে। সে কারণে শহরের ছেলেমেয়েরা দূরের কথা, বর্তমানে গ্রামের ছেলেমেয়েরাও গরু কিংবা মহিষের গাড়ির শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।

যুগ যুগ ধরে কৃষকের কৃষি ফসল বপন ও বহনের গুরুত্বপূর্ণ বাহন হিসেবে পরিচিত ছিল গরু আর মহিষের গাড়ি। গরু- মহিষের গাড়ি দুই চাকাবিশিষ্ট মহিষ-গরু বা বলদ দিয়ে টানা এক প্রকার বিশেষ যান। গরু-মহিষের গাড়ির চাকা গুলো শুকনো কাঠ দিয়ে তৈরি করা হয়। গাড়ির সামনের দিকে একটি জোয়ালের সাথে দুটি গরু বা বলদ এবং মহিষ জুটি মিলে গাড়ি টেনে নিয়ে চলে। সাধারণত চালক বসেন গাড়ির সামনের দিকে। আর পেছনে বসেন যাত্রীরা। বিভিন্ন মালপত্র বহন করা হয় গাড়ির পেছন দিকে। বিভিন্ন কৃষিজাত দ্রব্য ও ফসল বহনের কাজে গরুর গাড়ির প্রচলন ছিল ব্যাপক। গ্রাম বাংলায় ঐতিহ্যগতভাবে গরুর গাড়ি এক দশক আগেও যাতায়াত ও মালবহনের কাজে ব্যবহৃত হতো। অনেক অঞ্চলে রাস্তা পাকা না থাকায় এক সময় যান্ত্রিক যানবাহন চলাচল করত না। ফলে গরুর গাড়িই ছিল একমাত্র ভরসা।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram