এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাট-বগুড়া মহাসড়কের কালাই উপজেলার বাঁশের ব্রিজ এলাকায় ঘটে গেছে এক ভয়ংকর ডাকাতির ঘটনা। ডাকাতদল মধ্যরাতে রাস্তার ওপর গাছ ফেলে ব্যারিকেড দিয়ে একের পর এক যানবাহন থামিয়ে, যাত্রী, চালক ও হেলপারদের আক্রমণ করে মূল্যবান সামগ্রী লুট করে। কৌশলে নৈশ কোচ, ট্রাকসহ মাছভর্তি পিকআপ ভ্যান ছিনিয়ে নিয়ে যায় ডাকাতরা। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে প্রায় পাঁচটি যানবাহন এই ডাকাতির কবলে পড়ে।
পুলিশ ও স্থানীয়দের তথ্য মতে, ডাকাতরা প্রথমে জয়পুরহাট-বগুড়া সড়কের বাঁশের ব্রিজ এলাকায় সড়কে গাছ ফেলে ব্যারিকেড দেয়। এতে ঢাকাগামী শাহ ফতেহ আলী ও যমুনা লাইন বাসের যাত্রীরা ডাকাতদের হাতে পড়ে। ডাকাতদল যমুনা লাইনের যাত্রীদের সর্বস্ব কেড়ে নেয় এবং শাহ ফতেহ আলী বাসে ঢুকে চালক ও যাত্রীদের মারধর করে মোবাইল ফোন, টাকা ও অন্যান্য মূল্যবান জিনিসপত্র লুট করে। এ সময় বগুড়াগামী দুটি ট্রাকও থামানো হয় এবং চালকদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা ছিনিয়ে নেয় তারা।
একই সময়ে, কালাইয়ের বেয়ালা গ্রাম থেকে পাবদা মাছ নিয়ে সিরাজগঞ্জগামী একটি পিকআপ ভ্যান থামানো হয়। পিকআপের চালক ও মাছ ব্যবসায়ী গোলাম রব্বানী জানান, রাত আড়াইটার দিকে এই ব্যারিকেডের মুখে পড়েন তিনি। অস্ত্রের মুখে তাকে আর তার সহকারীকে অন্য একটি ট্রাকের কেবিনে বেঁধে রেখে মাছভর্তি পিকআপটি নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। "আমার ১৮ মণ পাবদা মাছসহ পিকআপ নিয়ে ডাকাতরা চলে গেল, আর কিছুই করতে পারলাম না," বলেন তিনি।
শাহ ফতেহ আলী বাসের ব্যবস্থাপক আব্দুল আজিজ জানান, ডাকাতদল তাদের গাড়ি ভাঙচুর করে যাত্রী ও চালকের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছে। তিনি আরও বলেন," ডাকাতির কবলে পড়া গাড়ির সংখ্যা পাঁচটি নয়, আরও বেশি বলে শুনেছি।"
এই নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির মধ্যে কাছাকাছি বাংলালিংক টাওয়ারের নৈশপ্রহরী মোজাফফর হোসেন জানান, "আগে পুলিশ আমাদের টাওয়ারের সামনে এসে বসতো, কিন্তু এখন আর আসে না। গত রাতে পুলিশ একবার টহল দিলেও এরপর আর তাদের দেখা পাইনি।" পরের দিন ফজরের নামাজের সময় উঠে দেখেন সড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি দাঁড়িয়ে আছে। ভয় পেয়ে গাড়ির কাছে যাননি তিনি।
কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন জানান, এখনও পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনার তদন্ত চলছে এবং পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।