নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের রসুলবাগ এলাকায় দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকসহ পাঁচজনকে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করেছে এলাকায় চিহ্নিত কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা। গতকাল শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
প্রতক্ষ্যদর্শী ও এলাকাবাসী জানান, রসূলবাগ এলাকার আনমুন প্যাকেজিং নামে একটি কারখানার মালামাল বিক্রি করে গাড়িতে লোড করার সময় রসুলবাগ এলাকার রিয়াজ উদ্দিন, স্বপন মিয়া ও গিয়াস উদ্দিন পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
দাবীকৃত চাঁদা না পেয়ে ওই মালভর্তি ট্রাক আটকে রাখেন তারা। আদমজী এম ডব্লিউ স্কুল এন্ড কলেজ প্রাঙ্গণে মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ রোধে থানা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য গিয়াস উদ্দিন। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনসহ বিএনপির সর্বস্তরের নেতারা।
চাঁদা দাবির সংবাদ পেয়ে আকবর হোসেন সন্ধ্যায় কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে রসূলবাগ এলাকায় এলে রিয়াজ উদ্দিন ও গিয়াস উদ্দিনের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং নেতা স্বপন মিয়া, আনিস মিয়াসহ ৫০-৬০ জন রামদা, চাপাতি, চায়নিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হামলা চালায়।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনের মাথায় আঘাত করে ও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এ সময় বিএনপি নেতা মনোয়ার হোসেন মনা, আল আমিন মিয়া, হানিফ মিয়া ও রুদ্র মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করা হয়।
আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেন ও রুদ্র মিয়ার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তিন নাম্বার ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আহত আল-আমিন মিয়া জানান, আমরা প্রগ্রাম শেষে বাড়ি ফেরার পথে রসুলবাগ এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের পূর্বপরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। আমাদের মারাত্মক আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় এলাকাবাসী উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গ্যাং নেতা হিসেবে পরিচিত। আমরা সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।
আহত মনোয়ার হোসেন মনা জানান, সন্ত্রাসীরা আমাদের নেতা আকবরসহ আমাদের হত্যা করতেই এই আক্রমণ করেছে।
তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবেই আমাদের ওপর আক্রমণ করেছে। চাঁদাবাজদের প্রতিহত করতে গিয়েই আমাদের প্রিয় নেতা আকবর হোসেন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
এ বিষয়ে রিয়াজ মিয়া, স্বপন মিয়া ও গিয়াস উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আল মামুন জানান, হামলার ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আমরা আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছি। শিগগিরই আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।