গোপাল অধিকারী, ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঈশ্বরদীতে এ বছর রোপা আমনের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা গেছে। মাঠে হাইব্রিড, উফশী ও স্থানীয় জাতের ধানগাছ ভালো হওয়ায় বাম্পার ফলনে খুশি ঈশ্বরদীর চাষিরা
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, উঁচু আবাদি জমিতে হৃষ্টপুষ্ট ধানের গোছায় শিষ এসেছে। মাঠে মাঠে আমনে আমনে ভরা সবুজের সমারোহ। ধান গাছে আমনের শীষ উঁকি দিচ্ছে। নিচু জমির লালমোটা ও সাদামোটা ধানের শিষ একটু দেরিতে আসে। এ বছর পামরী, মাজরা, চুংগী, গান্ধী ও লেদা পোকার মতো ধানের অপকারী পোকার তেমন আক্রমণ হয়নি। নভেম্বরের শেষ দিকে মাঠে মাঠে আমন কাটা ও মাড়াইয়ের ধুম পড়ে যাবে। জাত ও শ্রেণি ভেদে ডিসেম্বরের মধ্যে সব আমন ধান উঠবে চাষির গোলায়। কৃষি বিভাগও এবার আমনের বাম্পার ফলন নিয়ে খুব আশাবাদী। তারা আমনের সম্ভাব্য ভালো ফলনকে আশীর্বাদ হিসাবে দেখছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, এবার ৩ হাজার ৬৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে কৃষক ও ব্লক সুপারভাইজারদের দাবি, এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হবে।
লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের কালামপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের কৃষক আহম্মদ শেখ বলেন, “এবার ১৩ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছেন। শেষ আশ্বিন পর্যন্ত প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি হওয়ায় বাড়তি সেচ লাগেনি, গাছও ভালো হয়েছে। সঠিক বাজারমূল্য পাবেন বলে আশা করেন তিনি।”
মুলাডুলি ইউনিয়ন বালিয়াডাংঙ্গা গ্রামের চাষি হরি দাশ বলেন, “এ বছর তিন বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। তার মধ্যে ১০ কাঠা জমিতে লালমোটা ও ৫ কাঠা জমিতে দেশি ময়নামতি ধান লাগিয়েছেন। জমির ধান ভালো হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ ও রোগবালাই কম হওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। ফসল কাটা পর্যন্ত কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো লাভ হবে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মিতা সরকার বলেন, “মাঠের সার্বিক অবস্থা ভালো। এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ধানের উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করেন তিনি। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া, ধানখেতে জরিপ করে পোকা ও বালাই চিহ্নিত করা, কৃষক প্রশিক্ষণ, কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সরবরাহ এবং কৃষি উপকরণ দেওয়া হচ্ছে। কোনো বিপর্যয় না হলে এবং দাম ঠিক থাকলে কৃষকেরা এবার লাভবান হবেন।”