এম মনিরুজ্জামান, রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতা তানভীর শেখ (২১) হত্যা মামলায় জাহিদুল ইসলাম জিসান (২২) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শরীফ আল রাজীব।
রাজবাড়ী জেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম রোমান বলেন, তানভীর হত্যা মামলায় পৌর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক জিসানকে গ্রেপ্তার করেছে। হত্যাকাণ্ডে যদি তার সম্পৃক্ততা থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গ্রেপ্তার জিসান সদর উপজেলার দাদশী ইউনিয়নের কামালদিয়াকান্দি গ্রামের নুরুর ছেলে। তিনি রাজবাড়ী পৌর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও তানভীর হত্যা মামলার এজাহারনামীয় দুই নম্বর আসামি। নিহত তানভীর শেখ রাজবাড়ী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি পৌরসভার বিনোদপুর এলাকার বাবু শেখের ছেল ও ডা. আবুল হোসেন কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব বলেন, গত বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকালে তানভীরের মামা আলম শেখ বাদী হয়ে সবুজকে ১ নম্বর আসামি ও জিসানকে ২ নম্বর আসামি করে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৮ থেকে ১০ জনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার (১৭ নভেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা জেলার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ এলাকা থেকে জিসানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জিসান পুলিশকে জানান, তিনি তানভীর শেখের হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন। পরে তার দেখানো পথ অনুযায়ী সোমবার দুপুর পৌনে ২টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর মৌলভীঘাট-সংলগ্ন কবরস্থানের ভেতর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি স্টিলের সুইচ গিয়ার চাকু ও একটি লোহার চাপাতি উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তানভীর হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) শরীফ আল রাজীব আরও বলেন, এর আগে ১৩ নভেম্বর তানভীর হত্যা মামলার ৪ নম্বর আসামি কাজলকে ও ৮ নম্বর আসামি রহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার প্রধান আসামি সবুজসহ বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ আল রাজীব।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বিনোদপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে বাড়ির পাশে মুন্নুর দোকানে ডিম আনতে যান তানভীর। সেখানে কিছুক্ষণ দেরি করে পৌনে ৯টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে বিনোদপুর সার্বজনীন দুর্গামন্দির-সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড় এলাকায় সবুজ ও জিসানসহ কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। এতে তার পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে যায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেন। তবে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় সেখানকার জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। ফরিদপুর নেওয়ার পথে মারা যান তানভীর।