এস এম আব্দুল্লাহ সউদ, কালাই (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজারে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি দেখা দিয়েছে। এক কেজি চালের দাম দিয়েও বর্তমানে কেনা যাচ্ছে না এক কেজি আলু। স্থানীয়দের মতে, এমন পরিস্থিতি এর আগে কখনো দেখা যায়নি। ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে আলুর মূল্য এতটাই বেড়েছে যে তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে।
জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ক্রেতাদের দাবি, বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হোক। নিয়মিত বাজার মনিটরিং এবং কঠোর নজরদারি চালানোর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে তারা আশা করছেন।
গত শনিবার উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার পরিদর্শনে দেখা গেছে, প্রতিকেজি কাটারি চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৮ টাকায় আর প্রতিকেজি আলুর দাম ৭৫ টাকা। ফলে এক কেজি চালের মূল্য দিয়েও এক কেজি আলু কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
কালাই পৌর বাজারের কৃষক জালাল উদ্দীন বলেন, ছেলে আলুর তরকারি ছাড়া ভাত খেতে চায় না। তাই আলুর দাম যতই বাড়ুক, কিনতে বাধ্য হচ্ছি। আলু যেন দিনদিন সোনার হরিণ হচ্ছে।
অন্যদিকে, বাজারের আলু ব্যবসায়ীরা বলছেন, মোকাম থেকেই বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। জিন্দারপুর বাজারের ব্যবসায়ী আলতাব হোসেন বলেন, “আমরা মোকামে ৭০ টাকায় আলু কিনে এনে খুচরা বাজারে ৭৫ টাকায় বিক্রি করছি। এর চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে আমাদের লাভ থাকবে না।”
স্থানীয় ষাটোর্ধ্ব এক ক্রেতা খয়বর আলী বলেন, “আমার জীবনে খুচরা বাজারে আলুর দাম কখনো এতো বেশি দেখিনি। সরকারের বাজার তদারকির অভাবেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আলুসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার বর্তমানে চরম অস্থিতিশীল। সঠিক তদারকির মাধ্যমে এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করা দরকার।
পৌর এলাকার শিক্ষক মো.সাজ্জাদুর রহমান বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধু কৃষক বা নিম্ন আয়ের মানুষ নয়, পুরো মধ্যবিত্ত শ্রেণিকেও নাজুক অবস্থায় ফেলে দিয়েছে। দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে সংকট আরও তীব্রতর হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
উপজেলার কৃষি অফিসার অরুণ চন্দ্র রায় মনে করছেন, সরবরাহ ব্যবস্থার ঘাটতি, অসাধু ব্যবসায়ী দের কারসাজি এবং বাজার তদারকির অভাবেই নিত্যপণ্যের এমন অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে।
উপজেলা বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান বলেন, “বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বিষয়ে আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি এবং বাজার পরিস্থিতি নজরদারিতে রয়েছে। যদি কেউ অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি করে বা বাজার ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তার বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”