মহিউদ্দিন সাগর, নগর প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: সুনির্দিষ্ট ও নির্ভরযোগ্য তথ্যের ভিত্তি করে সমাজের অসংগতির সত্য তথ্য প্রশাসনের নজরে আনতে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে জুয়ার আসরের ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে দেশের স্বনামধন্য জাতীয় দৈনিক সময়ের কাগজ পত্রিকায় গত ৮ জুলাই ২০২৪ ইং তারিখে "চট্টগ্রামে চলছে জমজমাট জুয়ার আসর, নেপথ্যে সমাজকল্যাাণ ও পুলিশ কর্মকর্তা" শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন কালামিয়া বাজারস্থ বাহার কনভেনশন হলে দীর্ঘদিন যাবৎ জুয়ার আসরের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট। তাই পেশার দায়বদ্ধতা থেকে সংবাদ খানা প্রকাশ করে সংবাদমাধ্যমটি এতেই প্রতিশোধের দানা বাঁধে প্রতিপক্ষের।
তাই সংবাদ প্রকাশের জের ধরে চিহ্নিত জুয়াড়ি জিয়া ৮ জুলাই দুপুর আনুমানিক দেড়টায় দৈনিক সময়ের কাগজ এর আঞ্চলিক সম্পাদক সিনিয়র গণমাধ্যম কর্মী নুর মোহাম্মদ রানার হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে ফোন করে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ করে মিথ্যা মামলার আসামি করবে ও প্রাণে মেরে ফেলবে মর্মে বিভিন্ন হুমকি ধমকি দেয়। একই ভাবে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য "দৈনিক নতুন সময়" এর স্টাফ রিপোর্টার মোঃ ইসমাইলকেও হুমকি ধমকি প্রদান করে। এই বিষয়ে জুয়াড়ি ওরফে বাহার কনভেনশন হলের জুয়ার আসরের ম্যানেজার জিয়াকে অভিযুক্ত করে সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানা সিএমপি'র বাকলিয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। থানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগটি জিডি হিসাবে গ্রহণ করেন। যার জিডি নং-৪৩৭ তাং-৮/৭/২৪ ইং। এই জিডির বিষয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার ও এডিশনাল পুলিশ কমিশনার ক্রাইম (অতিরিক্ত) কেও অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, বাহার কনভেনশন হলে জুয়ার আসর নিয়ে নানা শিরোনামে জাতীয় দৈনিক গণকন্ঠ পত্রিকাসহ আরো বেশ কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। ভুক্তভোগী সাংবাদিকগণ জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী জানান সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) আব্দুল মান্নান মিয়া বিপিএম (সেবা) ওভার ফোনে বলেন, অপরাধী যেই হোক কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বিষয় টা আমরা আমলে নিয়েছি এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।
বাকলিয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ ওসি মোঃ আফতাব হোসেন বলেন, জিডির বিপরীতে আমরা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। বিষয় টা পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিক অপহরণ ও অপরাধীদের বিভিন্ন হুমকি দমকির বিষয়ে জানতে চাইলে দৈনিক সকালের সময় এর বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান এস এম পিন্টু বলেন, আমরা সাংবাদিকরা আজ সত্যিই অসহায়। আমাদের সম্মান কতটুকু আছে তা সাধারণ মানুষ জানে কিন্তু আমাদের জীবনের নিরাপত্তা কতটুকু আছে তা আমরাই বলতে পারছি না। দেশের প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সকল দায়িত্বশীলদের প্রতি অনুরোধ সাংবাদিকদের জন্য অন্তত একটা নিরাপত্তা সেল করুন এতে অন্ততপক্ষে অপরাধীরা কিছুটা হলেও সাহস হারাবে।
জাতীয় ইংরেজি দৈনিক দি বাংলাদেশ টুডে এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান এস এম আকাশ বলেন, আমরা সাংবাদিক এটা এখন বলতেই লজ্জা পাচ্ছি সাথে ভয়ও পাচ্ছি কেননা কে বন্ধু কে শত্রু চিহ্নিত করতে পারছি না। পেশাদারিত্ব আজ শনির কবলে পড়েছে। যে পেশাকে পবিত্র বলা হতো, যাদেরকে জাতির বিবেক বলা হচ্ছে তারা আজ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে জীবন করছে। এটা কোন স্বাধীন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য মঙ্গলকর নহে। সিনিয়র সাংবাদিক নুর মোহাম্মদ রানাকে যারা বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধমকি দিচ্ছে তাদেরকে অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করার জন্য বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন কাছে।