জিহাদ রানা, বরিশাল ব্যুরো চীফ: বরিশালে এক কিশোরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে। দুই মাস ধরে নিখোঁজ মো. সোহেল ফরাজীর (১৫) নামক কিশোরের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সন্ধ্যায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন খয়রাবাদ সেতুর নিচ থেকে এ কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় ইমরান নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান মুকুল। সোহেল ফরাজী বরিশাল নগরের দক্ষিণ আলেকান্দা রিফিউজি কলোনী এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক ফরিদ ফরাজীর ছেলে।
ওসি জানান, সোহেলের ব্যাটারিচালিত রিকশা নেওয়ার জন্য পরিকল্পনা করে তার ৪ বন্ধু হৃদয়, বাপ্পি, রাকিব এবং ইমরান। পরিকল্পনা অনুযায়ী বরিশাল নগরের লাকুটিয়া সড়কের একটি দোকান থেকে ঘুমের ওষুধ কেনা হয়। পরে কীর্তনখোলা নদীর ওপর সেতুতে এনাজিং ড্রিংকসে গুঁড়ো করা ঘুমের ওষুধ মেশানো হয়। সেখান থেকে ৫ জন খয়রাবাদ সেতুর নিচে যায়। পরিকল্পনা অনুযায়ী ঘুমের ওষুধ মেশানো এনার্জি ড্রিংকস পান করানো হয় সোহেলকে। এতে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে তাকে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। পরে রিকশা বিক্রি করে ইমরান পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, সন্ধান পাওয়া কঙ্কালটি নিখোঁজ কিশোর মো. সোহেল ফরাজীর (১৫) বলে জানিয়েছে আটক বন্ধু ইমরান খান। আটক ইমরান একই এলাকার বাসিন্দা নান্না খানের ছেলে। সোহেল ফরাজীর ভাই সোহাগ ফরাজী জানান, সোহেল ট্রাকচালকের সহকারী হিসেবে কাজ করতো। চালক বিদেশে চলে যাওয়ায় সে বেকার ছিল। ২মাস আগে তার ভাইকে ডেকে নেয় বন্ধু ইমরান। তখন ভাই সোহেল বাবার ভাড়ায় চালিত ব্যাটারিচালিত রিকশাটি নিয়ে বের হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এমনকি ২ মাস ধরে বন্ধু ইমরানও নিখোঁজ ছিল।
তিনি জানান, পুলিশ তাকে কোতয়ালি মডেল থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সোহেলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তখন বিষয়টি বন্দর থানায় জানানো হয়। বন্দর থানা পুলিশ ইমরানকে নিয়ে খয়রাবাদ সেতুর নিচে গিয়ে একটি কঙ্কাল পেয়েছে ।
এ বিষয়ে ঝালকাঠি জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুহিতুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার ঠিকানা বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় হলেও হত্যাকাণ্ডটি বরিশাল ও ঝালকাঠির বর্ডার এলাকায় হওয়ায় সীমানা নির্ধারণের কাজ চলছে। পরবর্তীতে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার পাশাপাশি পলাতক সকল আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।