বগুড়ার ধুনট পৌরসভার মেয়র ও বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা এজিএম বাদশাহ, তার ছেলে সাব্বির হোসেন এবং ভাতিজা আবু রায়হানের বিরুদ্ধে কোটাবিরোধী আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে নাশকতার অভিযোগ উঠেছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ফুঁসে উঠেছেন। শনিবার বিকালে উপজেলা শহিদ মিনার চত্বরে পৌর ছাত্রলীগের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ধুনট পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলেন, মেয়র এজিএম বাদশাহ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও তার মা ভাতাভোগী। বিএনপি-জামায়াত চলমান কোটা আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সারা দেশে নাশকতা চালিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার সরকারি সম্পদ ধ্বংস, প্রশাসনসহ সাধারণ মানুষের জানমাল হুমকির মুখে ফেলে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চেয়েছিল। ঠিক সেই মুহূর্তে এজিএম বাদশার প্রশ্রয়ে ছেলে সাব্বির হোসেন ও ভাতিজা আবু রায়হানের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে নাশকতা করতে গত ১৮ জুলাই ধুনট উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে জড়ো হতে থাকেন। আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধাওয়া করলে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। তাদের কাছ থেকে দেশীয় অস্ত্র ও ইটপাটকেলের ব্যাগ কেড়ে নিয়ে পুলিশ ও সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে জমা দেওয়া হয়। পরে তারা মেয়র এজিএম বাদশাহর বাড়ির সামনে জড়ো হতে থাকেন। সেখান থেকেও তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। পুলিশ সেখান থেকে দুজনকে গ্রেফতার করে। রামদা, কিরিচ, লোহার রড, বাটাম ও ইটভর্তি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে জমা দেওয়া হয়। ধাওয়া খেয়ে তারা মেয়রের বাড়ির পূর্ব পাশে পুকুরপাড়ে আবারও সমবেত হওয়ার চেষ্টা করে। মেয়রের ছেলে ও ভাতিজা পর দিন সন্ধ্যায় দলবলসহ ছাত্রলীগ ধুনট কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক সোহাগের বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও মেয়রের নামে হুমকি দেন।
তিনি আরও বলেন, ধুনট পৌর মেয়র এজিএম বাদশাহ আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী হয়েও সরকার পতনের জন্য গত ১৪ বছর পারিবারিকভাবে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আসছেন। নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এতে তিনি মরিয়া হয়ে সপরিবারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেন।
সংবাদ সম্মেলনকারী ছাত্রলীগ নেতা ইব্রাহিম হোসেন দুদকের কাছে মেয়র বাদশাহর প্রথম পৌরসভা নির্বাচনের হলফনামায় সম্পদের বিবরণ ও বর্তমানে ভাইসহ তার সম্পদের হিসাব নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ধুনট উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি সাচ্চু মল্লিক, যুবলীগের সভাপতি শেখ মতিউর রহমান, শ্রমিক লীগের সভাপতি ফজলুল হক মিলন সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু সালেহ স্বপন, পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি শাহরিয়ার খান বিজয়, সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন ইবু, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাইদুল ইসলাম রনি, ছাত্রলীগ ধুনট সরকারি ডিগ্রি কলেজ শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সোহানুর রহমান সোহান প্রমুখ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে ধুনট পৌরসভার মেয়র এজিএম বাদশাহ জানান, ছেলে ও ভাতিজাসহ তার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার চেষ্টা চলছে। তবে পৌরসভার কতটা উন্নয়ন করা হয়েছে, তা পৌরবাসী অবগত আছেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান। তার বাবা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাকালীন নেতা। সবসময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলেন।