এস এম আকাশ, ব্যুরো প্রধান, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চার ঘণ্টারও বেশি সময় অবস্থান করে মার্চ ফর 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস' কর্মসূচি শেষ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় সমর্থন দিয়ে তাদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবীদের একাংশ। বুধবার (৩১ জুলাই) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল নিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে এসে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বুধবার সকাল থেকে আদালতপাড়ার দোয়েল ভবনের সামনে অবস্থানের পর ৩টার দিকে হ্যান্ডমাইকে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। এরপরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের করে মড়ক পার করে ফিরে যান আন্দোলন সমর্থনকারী আইনজীবীরা।
এর আগে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয় নগরের লালদিঘি-কোতোয়ালী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি চালিয়েছে। পুলিশ সদস্যরা আদালতের প্রবেশমুখে ব্যারিকেড দিয়ে রাখলে সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা প্রবেশ করতে পারেননি।
পরে আইনজীবীদের একাংশ মিছিল-স্লোগানসহ আদালতের বাইরে বের হয়ে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আদালতে ঢুকে দোয়েল ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন।
পরবর্তীতে দেখা গেছে, ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের নিয়ে আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেন। দোয়েল ভবনের সামনে ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অবস্থান নেন। তাদের সাথে ছিলেন আইনজীবীদের একটি অংশ। এরপর দোয়েল ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’,‘আমার ভাই মরলো কেন,প্রশাসন জবাব চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে, আন্দোলনের একপর্যায়ে এনেক্স ভবন-২ এর সামনে ‘বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ’র ব্যানারে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত আইনজীবীরা। দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থান এবং স্লোগানে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে আদালতপাড়ায়। আওয়ামী সমর্থিত আইনজীবীরা দাবি করেন শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্দেশ্য করে বিভিন্ন উস্কানিমূলক স্লোগান দিয়েছেন। এ নিয়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে দুপক্ষের মাঝে। নগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী এসে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেন।
শিক্ষার্থীদের কর্মসূচি ঘিরে পুলিশ এবং বিজিবি সদস্যদের সতর্ক অবস্থানে দেখা গেছে। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ আদালতে এলাকার ভেতরের দিকে অবস্থান নিয়েছিল।