ঢাকা
১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৭:৫২
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ১, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ১, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ১, ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে ১৫ হাজার গাছ কাটার প্রস্ততি

মাসুদুর রহমান খান, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: সড়কের দুই পাশে সারি সারি গাছ। তাতে লাল রঙের চিহ্ন। বসানো হয়েছে ক্রমিক নম্বরও। স্থানীয় লোকজন বলছেন, গাছের গায়ে মৃত্যুর দাগ পড়েছে। লক্ষ্মীপুর-রামগতি-চর আলেকজান্ডার আঞ্চলিক সড়কসহ বেশ কয়েকটি সড়কের প্রায় ১৫ হাজার গাছের ভাগ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এভাবেই। সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন কাজের জন্য সবচেয়ে বেশি গাছ কাটা পড়বে ৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ লক্ষ্মীপুর-রামগতি-চর আলেকজান্ডার আঞ্চলিক সড়কে। সড়কটির দুই পাশেই সারি সারি কড়ই, মেহগনি ও শিরীষগাছ রয়েছে। মোট গাছের সংখ্যা ১৩ হাজার ৪৪৫ বলে বন বিভাগ জানায়।

উন্নয়ন কাজের জন্য সড়কটির দুই পাশের সব গাছই কাটা পড়বে। জেলার রামগতি উপজেলার ছোট ছোট কয়েকটি সড়কের উন্নয়ন কাজও শুরু হবে। এজন্য এসব সড়কের পাশে ১ হাজার ৬৭২টি গাছ কাটা পড়বে। অন্যদিকে সংস্কারের জন্য রামগঞ্জে সড়কের পাশে কাটা পড়বে ১২৫টি গাছ। গত বছর এসব সড়কের গাছ কাটার জন্য বন বিভাগকে চিঠি দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সুপারিশে জেলা পরিবেশ ও বন উন্নয়ন কমিটি গাছগুলো কাটার অনুমোদনও দিয়েছে। মোট ১৫ হাজার ২৪২টি গাছ কাটার জন্য নাম্বারিং শেষ হয়েছে। নিলামের প্রক্রিয়া শেষ হলেই গাছ কাটা শুরু হবে।

রামগতি সড়কের ভবানীগঞ্জ বাজার এলাকার স্থানীয় সাইফুল ইসলাম বলেন, এলাকার লোকজনকে নিয়ে ২০ বছর আগে গাছগুলো লাগানো হয়। তীব্র তাপপ্রবাহ থেকে মুক্তি পেতে একদিকে সরকার সারাদেশে গাছ রোপণের প্রচারণা চালাচ্ছে, অন্যদিকে সড়ক প্রশস্তকরণের নামে চলছে গাছ হত্যার আয়োজন। গাছ কাটার কথা শুনে স্থানীয় লোকজন অনেকেই বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

সামাজিক বনায়নের একটি কমিটির সদস্য ভবানীগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা মাহবুবুর রহমান বলেন, গাছ লাগানোর পর তাঁরা দেখেশুনে রেখেছেন। এজন্য তাঁদের সঙ্গে লিখিত চুক্তিও আছে। গাছ বিক্রি হলে তাঁরা কিছু টাকা পাবেন। তবু গাছ কাটার উদ্যোগ নেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হয়নি। গত ৩ জানুয়ারি গাছগুলো কাটার জন্য লক্ষ্মীপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বন বিভাগকে চিঠি দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ১৫ হাজার ২৪২টি গাছ বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বন বিভাগ। কিছুদিনের মধ্যেই দরপত্র আহ্বান করা হবে।

সামাজিক বনায়ন বিধিমালা অনুযায়ী, গাছ বিক্রির টাকা উপকারভোগী ৫৫ ভাগ, বন অধিদপ্তর ১০ ভাগ, ভূমির মালিক হিসেবে সওজ ২০ ভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) ৫ ভাগ পাবে। বাকি ১০ ভাগ টাকা দিয়ে আবার গাছ লাগানো হবে।

এ বিষয়ে সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন বলেন, লক্ষ্মীপুর-রামগতি-চর আলেকজান্ডার আঞ্চলিক সড়কটি এখন ১৮ ফুট প্রশস্ত। একে ২৪ ফুট করা হবে। সড়ক প্রশস্ত করতে হলে গাছ কাটতেই হবে। এটাই নিয়ম।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সওজের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, এক পাশের গাছ কেটেও প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব। সড়ক প্রশস্ত করতে দুই পাশেই গাছ কাটার প্রয়োজন নেই।

সরেজমিন দেখা গেছে, লক্ষ্মীপুর সদর-কমলনগর, আলেকজান্ডার ও রামগতি সড়কের দুই পাশে সারি সারি নানা জাতের গাছ। গাছগুলোর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর। গাছে গাছে রয়েছে পাখির বাসা। প্রতিটি গাছের গায়ে লাল কালিতে দেওয়া হয়েছে চিহ্ন ও নম্বর। সড়কের জমির মালিক সওজ। তাদের সিদ্ধান্তে গাছ কাটা হবে।

এ কথা জানিয়ে লক্ষ্মীপুর বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক ফিরোজ আলম চৌধুরী বলেন, গত জুন মাসের শেষ দিকে জেলা কমিটির সভায় সওজ কর্তৃপক্ষ দ্রুত গাছ কেটে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী দু–এক মাসের মধ্যে গাছগুলো কাটা শেষ হতে পারে।

লক্ষ্মীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম বলেন, সরকরের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সড়ক সম্প্রসারণের প্রক্রিয়া চলছে। এতে বন বিভাগের লাগানো গাছ কাটা পড়বে। যেহেতু অনেক গাছ কাটা পড়বে, স্বাভাবিকভাবেই পরিবেশের ক্ষতি হবে। সড়কের কাজ শেষ হলে আবার দুপাশে ফলদ গাছ লাগানো হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram